‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ দুষ্কৃতীই হোমগার্ড

দেশ

নিউজ পোল ব্যুরো: দেখেছেন এমন মাস্টারস্ট্রোক? উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে এমনই এক কাহিনি সামনে এসেছে। এক সময় এলাকার ত্রাস হয়ে ওঠা কুখ্যাত দুষ্কৃতী নকরু যাদব এতটাই ধুরন্ধর ছিলেন যে, পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে নিজেকে গায়েব করে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, নিজের নাম-পরিচয় বদলে, শিক্ষাগত যোগ্যতার ভুয়ো শংসাপত্র বানিয়ে সটান যোগ দিয়েছিলেন পুলিশের সঙ্গেই— হোমগার্ডের চাকরিতে!

১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯— এই পাঁচ বছরে আজমগড় আর তার আশেপাশে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন নকরু। ডাকাতি, অপহরণ, তোলাবাজি— অপরাধের তালিকায় ছিল সবই। এই দুষ্কৃতীর খোঁজে পুলিশ হন্যে হয়ে ঘুরছিল। কিন্তু নকরু তখন বেমালুম গা-ঢাকা দেন। কিছুদিন পর যেন একেবারে নতুন অবতারে ফিরে আসেন। তখন আর তিনি নকরু নন, তিনি হয়ে যান নন্দলাল যাদব। শুধু নাম বদলেই ক্ষান্ত হননি। পরিবারের এক সদস্যের নাম ব্যবহার করে বানিয়ে ফেলেন শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল শংসাপত্র। আর সেই শংসাপত্রের জোরে হোমগার্ডের চাকরি বাগিয়ে নেন। সেই হোমগার্ডের চাকরিতে কেটে যায় টানা ৩৫ বছর। পুলিশের নাকের ডগায় থেকে পুলিশকেই ফাঁকি দিতে থাকেন তিনি। বয়স এখন ৫৭, অবসরের জন্য আর কয়েক বছর অপেক্ষা। কিন্তু তার আগেই পণ্ড হল সব পরিকল্পনা।

ঘটনার সূত্রপাত তাঁর ভাইপোর হাত ধরে। সম্প্রতি নকরুর ভাইপো জানতে পারেন যে তাঁর কাকা আসলে এলাকার এক কুখ্যাত গ্যাংস্টার, যে কিনা পরিচয় গোপন করে এতদিন পুলিশের হোমগার্ড হয়ে কাজ করছে! এই খবর পেয়ে তিনি পুলিশকে জানিয়ে দেন। তদন্তে নেমে পুলিশ পুরনো নথি ঘেঁটে নিশ্চিত হয় যে, নন্দলাল আসলে তাদেরই বহুদিনের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নকরু যাদব।

শেষমেশ, আজমগড় থেকে নন্দলাল ওরফে নকরুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে প্রশ্ন একটাই— পুলিশেরই হোমগার্ড হয়ে পুলিশের হাতেই এতদিন ধরে এমন অসাধারণ লুকোচুরি খেলে দিলেন, আর কেউ কিছু টেরও পেল না, এ কীভাবে সম্ভব?নকরুর এই কাহিনী যেন বলিউডের সিনেমাকেও হার মানায়। কিন্তু হিন্দী সিনেমাকে হার মানালেও নকরু শেষ পর্যন্ত হার মানাতে সক্ষম হল না,গ্রেফতার তাঁকে হতেই হল।