কিউ আর কোডে ডুয়ার্স ভ্রমণ

জেলা প্রযুক্তি রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি: ডুয়ার্স—সবুজে ঘেরা বনভূমি, নদীর মায়াবী স্রোত, চা-বাগানের নিবিড় সৌন্দর্য্য এবং অগণিত বন্যপ্রাণীর এক অভূতপূর্ব মিলনভূমি। এই অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের টানে সারা বছর পর্যটকেরা ভিড় জমান ডুয়ার্সে। ডুয়ার্সের এই সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে যাঁরা ছুটে আসেন, তাঁদের অনেক সময়ই একটি সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়- কোথায় থাকবেন, কোথায় ঘুরবেন এবং কিভাবে যাবেন? এই সব তথ্য অনেক সময়ই সঠিক ভাবে তাঁদের জানা থাকে না। কিন্তু এই সমস্যায় আর ভুগতে হবে না পর্যটকদের। এই সমস্যার সমাধান নিয়ে এল ইস্টার্ন ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। পর্যটকদের সুবিধার্তে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্থানের তথ্য এখন মিলবে সহজেই। কেবল একটি কিউ আর কোড স্ক্যান করলেই মিলবে সব তথ্য। এই উদ্যোগ সেই সব পর্যটকদের সাহায্য করবে যাঁরা প্রথমবারের জন্য ডুয়ার্সে বেড়াতে আসছেন।

ডুয়ার্স নামটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সবুজের অনন্ত সাম্রাজ্য। এখানে যেমন রয়েছে বিস্তৃত চা-বাগান, ঠিক তেমনি আছে ঘন বনজঙ্গল, যেখানে বাস করে হাতি, গন্ডার, বাইসন, লেপার্ড সহ বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ। প্রকৃতির এই নিবিড় পরিবেশে মিশে আছে এখানকার চঞ্চল নদীদের গল্প। এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের আকর্ষণে প্রতিবছর অসংখ্য পর্যটক ছুটে আসেন ডুয়ার্সে। ডুয়ার্সের ভৌগোলিক বিস্তৃতি পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম- এই দুটি রাজ্য জুড়ে। সেবক-ওদলাবাড়ি থেকে শুরু হয়ে এটি ছড়িয়ে রয়েছে আসাম পর্যন্ত। ডুয়ার্সের বিভিন্ন পর্যটন স্থানগুলিকে আরও ভালোভাবে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার জন্য, সেগুলিকে ১৩টি ভিন্ন সার্কিটে ভাগ করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এক পর্যটন ব্যবসায়ীর মতে, ডুয়ার্সের এক অনন্য দিক হল এখানকার নদীগুলি। যেমন, কবি জীবনানন্দ দাসের কবিতায় উল্লেখিত ধানসিঁড়ি নদীটি আসামে অবস্থিত। এই নদী ও প্রকৃতির মেলবন্ধন ডুয়ার্সকে করে তুলেছে আরও আকর্ষণীয়। তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডুয়ার্সের প্রকৃত পরিবেশ ও বিস্তৃতি সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। এই অঞ্চলের সৌন্দর্য্য এবং ইতিহাসকে পর্যটকদের কাছে আরও সহজে ও সম্যকভাবে তুলে ধরতে চালু করা হয়েছে কিউ.আর কোড নির্ভর তথ্য প্রদানের ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে পর্যটকেরা সহজেই ডুয়ার্সের প্রকৃতি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।

পর্যটন ব্যবসা‌য়ীদের কথায়, এই পরিষেবাটি সহজ ও সুবিধাজনক। যাঁরা ডুয়ার্স সম্পর্কিত তথ্য শুনতে চান, তাঁরা হেডসেট ব্যবহার করে শুনতে পারবেন। আবার যাঁরা পড়তে চান, তাঁরা ভয়েস ওভার মিউট করে স্ক্রীনে থাকা লেখাগুলি পড়তে পারবেন। জলদাপাড়ার পর এবার রাজাভাতখাওয়া, কুমারগ্রাম, জয়গাঁও সহ ডুয়ার্সের অন্যান্য পর্যটন ক্ষেত্রেও এই কিউ আর কোড লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের জন্য এমন উদ্যোগ ডুয়ার্সে পর্যটনের প্রসারে নতুন দিশা দেখাবে বলেই আশা করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পর্যটকরা ডুয়ার্স সম্পর্কে আরও গভীর জ্ঞান লাভ করবেন এবং ডুয়ার্সে ভ্রমণ অভিজ্ঞতা হবে আরও সমৃদ্ধ। তাহলে আর কি? নির্দ্বিধায় নিশ্চিন্তে ঘুরে আসুন ডুয়ার্স আর উপভোগ করুন উত্তরের সবুজকে।