নিউজ পোল ব্যুরো: ১৪৪ বছর পর উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমে চলছে মহাকুম্ভ মেলা। এই মেলায় ভিড় জমিয়েছেন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ও সাধু- সন্তরা। আগামী ২৯ জানুয়ারি মৌনী অমাবস্যার মহাপুণ্যস্নান উপলক্ষে বিশাল প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রায় ১০ কোটি ভক্তের স্নান ও অন্যান্য ধর্মীয় কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে তিনি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মহাকুম্ভ মেলার অগ্রগতি ও পরবর্তী স্নানের প্রস্তুতি পর্যালোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন।এরইমধ্যে মেলার আনুষ্ঠানিক স্নান পর্ব শুরু হয়েছে ১৩ জানুয়ারি থেকে। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে লক্ষ লক্ষ ভক্ত ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্যস্নান করেছেন।
মহাকুম্ভ মেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গত তিন দিনের প্রস্তুতির বিশেষ পর্যালোচনা করেছেন। সূত্রের খবর, এই বিশেষ তিথিতে অমৃত স্নান করতে আনুমানিক ৮-১০ কোটি ভক্তের উপস্থিতি প্রত্যাশিত। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, মৌনী অমাবস্যার দিনে গঙ্গাস্নান করলে ভক্তদের সকল মনোবাসনা পূর্ণ হয় এবং মৃত্যুর পরে অমৃতলোকের যাত্রার পথ সুগম হয়। ৪৬ দিনের মহাকুম্ভ মেলার মধ্যে মৌনী অমাবস্যার স্নানই সব থেকে বেশি পুণ্যার্থীদের আকর্ষণ করে। তাই এই বিরাট ভিড়ের ব্যবস্থাপনা এবং স্নানযাত্রাকে নিরাপদ করতে প্রশাসন বিশেষ তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। এদিনের বিশেষ আকর্ষণ হল নাগা সাধুদের শোভাযাত্রা। তাঁরা ঐতিহ্য মেনে শোভাযাত্রার মাধ্যমে পবিত্র স্নানে অংশ নেন। ধর্মীয় মতে এই স্নানের ফলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মৌনী অমাবস্যার স্নানকে আরও সুশৃঙ্খল এবং সহজতর করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ইন্টারনেট পরিষেবা এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, যাত্রী এবং তীর্থযাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক পরিষেবা প্রদান অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ণ। মেলা প্রাঙ্গনে বিদ্যুৎ এবং জল সরবরাহ যেন দিন- রাত ২৪ ঘন্টা অব্যাহত থাকে, তা নিশ্চিত করার কথাও তিনি বলেছেন। নদীর ঘাটগুলিতে সব ধরণের সুরক্ষার ব্যবস্থা, ব্যারিকেডিং এবং তীর্থযাত্রীদের নির্বিঘ্নে অভিজ্ঞতার জন্য আধুনিক ব্যবস্থার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, রাজ্যের ৭৫টি জেলা থেকে মেলার সরাসরি বাস পরিষেবা পর্যাপ্ত পরিমানে চালু রাখতে হবে। এছাড়া মেলায় উপস্থিত অন্তঃসত্ত্বা নারী, প্রবীণ নাগরিক ও দিব্যাঙ্গদের দ্রুত পরিষেবা দিতে পর্যাপ্ত যানবাহন ব্যবস্থা চালু করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই সকল ব্যবস্থার মাধ্যমে মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে আগত তীর্থযাত্রীদের জন্য মেলার অভিজ্ঞতা আরও উন্নত ও স্মরণীয় করে তোলার চেষ্টা করা হবে।