আত্রেয়ীতে পরিযায়ী পাখি

জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ দিনাজপুর: শীতকাল এলেই সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভারতে হাজির হয় নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। তাদের এই আগমন যেমন প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, তেমনই আমাদের পরিবেশের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। এই সময় পরিযায়ী পাখিদের উপস্থিতি শুধু প্রকৃতি প্রেমীদেরই আনন্দ দেয় না, বরং পরিবেশ বিজ্ঞানীদের কাছেও এক বিশেষ গবেষণার ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। ঠিক তেমনই শীত নামতেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় জড়ো হচ্ছে দলে দলে পরিযায়ী পাখি। জেলার বিভিন্ন নদী, জলাশয় এবং বনাঞ্চলে দেখা মিলেছে নানা প্রজাতির এই পরিযায়ী পাখিদের। বালুরঘাট, আত্রেয়ী নদী ও তার তীরবর্তী বনাঞ্চলে এদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। বিরল এই পরিযায়ী পাখিদের আগমন একদিকে যেমন প্রাকৃতিক ভারসাম্যের গুরুত্বপূর্ণ দিকটি তুলে ধরে, তেমনই অন্যদিকে শীত ঋতুর সূচনার বার্তাও বহন করে।

বালুরঘাট ও তার আশপাশের অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত ৮০টিরও বেশি প্রজাতির পরিযায়ী পাখির দেখা মিলেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পারপেল, সাম্পইন, লংটেল জাকানা, মুরহেন, ব্ল্যাকইট, লেসার হুইন্সেলিং ডাক, ব্রামিনীকাইট, প্লেনপিনিয়া, ব্রোঞ্জটেইল জাকানা। পক্ষী বিশেষজ্ঞ বিশ্বজিৎ বসাক জানিয়েছেন, “শীতকালে দক্ষিণ দিনাজপুরে এই পরিযায়ী পাখিদের আগমন একটি সাধারণ ঘটনা। তবে এবছর আগের তুলনায় পাখির সংখ্যা বেশি। এটি জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত ভালো লক্ষণ।” বিশেষজ্ঞের মতে, এই পাখিদের মধ্যে অনেকেই দলবদ্ধ হয়ে আসে এবং নির্দিষ্ট সময়ে ফিরে যায়। তবে কিছু পাখি পথ হারিয়ে এই অঞ্চলে থেকে যায়।

সমীক্ষা ও গণনার মাধ্যমে বনদফতর জানতে চায়, কোন কোন অঞ্চলে কোন প্রজাতির পাখির সংখ্যা বাড়ছে এবং এর পেছনের কারণ কী। সেইসঙ্গে পাখিদের থাকার জন্য আরও ভালো পরিবেশ তৈরী করা এবং খাদ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে। পরিযায়ী পাখিদের এই অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করতে জেলার বিভিন্ন জলাশয় ও নদীর ধারে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। প্রকৃতির এই দৃশ্য যেমন আনন্দ দেয়, তেমনই মানুষের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেয়। প্রতি বছর শীতের সময় দক্ষিণ দিনাজপুরে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা বাড়ছে। এসব পাখি প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা আমাদের পরিবেশ রক্ষার প্রয়াসে নতুন দিশা দেখাচ্ছে।