নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি : হবহু যেন মানুষ! কথা বলে মানুষের মত, টনটনে জ্ঞান, যেকোনো ভাষায় তা সে বাংলা, হিন্দী বা ইংরেজি। গণিতের নামতা থেকে যেকোন সাধারণ জ্ঞান কিংবা কোনও ফিল্ম থেকে শুরু করে ক্রীড়া সব বিষয়েই টনটনে জ্ঞান তার। মানুষের মতই দ্রুত যেকোন বিষয়ে তথ্য দিতে পারে সে, এমনই অবিশ্বাস্য ‘হিউম্যানয়েড’ বানিয়ে তাক লাগিয়েছে কল্যাণীর একটি বেসরকারি কলেজের ছাত্র ও শিক্ষকরা। যে মানুষ না হলেও দেখতে সম্পূর্ণ মানুষের মতন। আপাত দৃষ্টিতে দেখলে কোনভাবেই বোঝা সম্ভব না সে মানুষ নয় আসলে।
পাশ্চাত্যের দেশে ইলন মাস্ক প্রথম তৈরি করেছিলেন এই ধরনের এ আই টেকনোলজি এক রোবট যার মূল্য ছিল কয়েক কোটি টাকা। তারপরেই এই ধরনের রোবট বানিয়ে বিশ্বের দরবারে নজির করলো কল্যাণীর বেসরকারি সংস্থা। কোটি টাকার বদলে ভারতীয় প্রযুক্তিতে এই একই ধরনের রোবট মাত্র কয়েক হাজার টাকা খরচ তৈরি হল ভারতে।
এই আবিষ্কারের পেছনে থাকা সর্বপ্রথম যে নামটি উল্লেখ্য তিনি চুঁচুড়া নোনাডাঙার বাসিন্দা বিশ্বরূপ নিয়োগী, যিনি পেশায় একজন অধ্যাপক। তাঁর পাঁচ ছাত্রকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি করেছেন অভিনব এই রোবট। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক্সের মেলবন্ধনে মানব রূপী এই রোবট তৈরি করেছেন তাঁরা। দীর্ঘ পাঁচ মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল প্রকাশ এই রোবটটি। যে অবিকল কথা বলে মানুষের মতন।
রোবোটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রচেষ্টায় তৈরি। অঙ্ক ফিজিক্স কেমিস্ট্রি কিংবা সমাজবিদ্যার রাষ্ট্রবিজ্ঞান সব বিষয়েই যার মধ্যে রয়েছে পারদর্শিতা, সেভাবেই তৈরি করা হয়েছে তাকে। এমনকি একাকিত্বে মানুষের সঙ্গেও মানুষের মতোই ব্যবহার করে মানসিক শান্তি প্রদান করতে পারবে এই রোবট। এমনই আশ্চর্যজনক ভাবে তৈরি করা হয়েছে রোবটটিকে যাতে এরইমধ্যে বিশ্বের দরবারে নিঃসন্দেহে রমরমিয়ে অন্যান্য রোবটকে টেক্কা দেবে এটি।
বিদেশের বাজারে এ আই টেকনোলজির ব্যবহারের রোবট থাকলেও ভারতীয় বাজারে এই ধরনের রোবট একেবারেই নতুন, এমনটাই দাবি করছেন রোবট নির্মাতা অধ্যাপক বিশ্বরূপ নিয়োগী। তাঁর কথায়, সম্প্রতি সময়ে মানুষের সিলিকন আর্ট মডেল তৈরি করে নিজের বাড়িতে রাখছেন নিজেদের প্রিয়জনকে মনে রাখার জন্য। এবারও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন। যেখানে ক্লোন টেকনোলজির মাধ্যমে যেকোন মানুষের গলার স্বর এবং তার থ্রিডি চিত্রের মাধ্যমে একেবারে সেই মানুষের রূপ দিয়ে তার কণ্ঠস্বর দিয়ে কোন মৃত মানুষকেও জীবিত করে তোলা যাবে এই রোবটের মাধ্যমে। একই সঙ্গে স্কুল কলেজ কিংবা কোন শপিংমলেও বাণিজ্যিক কাজের ব্যবহার করা যাবে তাঁদের তৈরি এই হিউম্যানয়েড রোবট।
এই বিষয়ে ওই বেসরকারি সংস্থার অধ্যাপক সহ পাঁচ ছাত্র জানান, মানুষের কল্যাণে কিভাবে এটিকে ব্যবহার করা যায় সেদিকে আপাতত চিন্তা রয়েছে তাঁদের। তবে আগামী দিনে বাণিজ্যিকভাবে রোবটকে প্রস্তুত করার কাজ চালাচ্ছেন এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা।