নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতাঃ- স্যান্টা সেজেই জীবন পার, তবু মেলেনি এখনও স্যান্টার কোনও উপহার!
শুরু করেছিলেন ঠাকুরদা, তারপর বাবা আর এখন তিনি। একেবারেই বংশ পরম্পরায় করে আসছেন তাঁরা এই কাজ। এই কাজ মানে জোকার সাজা। ভাবছেন এ আবার কি কথা বলছি, হ্যাঁ একদম ঠিক বলছি। শহর কলকাতার মাদার হাউসের পাশেই থাকেই এই সেলিম আহমেদ। যদিও তাঁর ভালো নামে তাঁকে কেউ চেনে না, সবাই তাঁকে সেলিম জোকারওয়ালা বলেই চেনেন। নিজে সকলকে স্যান্টা ক্লজ সেজে আনন্দ দেন কিন্তু তাঁর সৌভাগ্যের শিকেয় এখনও ছেড়েনি যার ফলে স্যান্টা তাঁর দুয়ারে আসেননি। একেবারই এঁদোগলির মধ্যে বাস তাঁর। এখনও পর্যন্ত একান্নবর্তী পরিবারেই থাকেন তাঁরা সকলে। তিনি তাঁর ভাই ও এক বোন। তাঁর দুই ছেলে সহ পরিবারেই সকলেই এই জোকারের কাজ করেই নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন।
বাপ ঠাকুরদা করতো অন্যরকম ভাবে কিন্তু তাঁর এই কাজের পথ চলা শুরু হয়েছিল একদম ছোটো গল্পের মতো করে। ১৯৯২সালে ১ আগষ্ট শুভমঙ্গল শো-রুম সাজানোর কাজ পেয়েছিলেন তিনি। তখনই মালিক বলেন অন্য এমন কিছু করতে হবে যাতে সকলের তাক লেগে যায়। সেলিম তখন বলেন তাহলে জোকার আনুন। মালিকের অনুমতি পেয়েই হাজির করে দিয়েছিলেন দুই জোকারকে। ব্যস আর যায় কোথায়। বাজার গেল জমে আর ভাগ্য গেল খুলে। ওই বছরেই ডিসেম্বর মাসে তিনি প্রথম স্যান্টা ক্লজ সেজে সকলের মন জয় করেন।
তারপরই সব জায়গা থেকে ডাক আসতে শুরু করলো সেলিমের এই স্যান্টা ক্লজ সাজার। তবে শুধুই স্যান্টাই নয়, কার্টুনের বিভিন্ন চরিত্রকে তিনি ফুটিয়ে তোলেন সকলের কাছে। জন্মদিনের পার্টি থেকে শুরু করে বিয়ে বাড়ি এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে সেলিম যায় না। যা দেখতে আজও সকলে ভিড় করেন। যেমন এই বছর এখুনি যেভাবে বুকিং হয়েছে তাঁর, তাতে করে তাঁর এখন দম ফেলার সময় নেই। তবে ওই, ভাগ্য বিড়ম্বনা। নিজে স্যান্টা সেজে সকলের মনোরঞ্জন করেন অথচ স্যান্টার দেখা এখনও পাননি তিনি তাঁর এই তিরিশ বছরের জোকারের জীবনে! দিন আসে দিন যায় তবু সেলিমের কপালে স্যান্টার আশীর্বাদ মেলে না। আর তাই একবুক স্বপ্ন নিয়েই আজও নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখেন সেলিম জোকারওয়ালা।