পেটে অণ্ডকোষ! জটিল অস্ত্রোপচারে প্রা‌ণ বাঁচলো যুবকের 

breakingnews জেলা রাজ্য স্বাস্থ্য

নিউজপোল ব্যুরো: বাইক দুর্ঘটনায় সেরকম কোন চোত পাননি বাইক আরোহী। কিন্তু কিছুক্চণ পরেই শুরু হয় অসহ্য পেটের যন্ত্রণা। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামীণ হাসপাতালে। কিন্তু সুস্থ না হওয়ায় তাঁকে বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত রাণাঘাট মহকুমা হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হলেন যুবক।

রাণাঘাট হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বাইক দুর্ঘটনার জেরে যুবকের একটি অণ্ডকোষ তাঁর তলপেটে ঢুকে যায়। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মহকুমা হাসপাতালেই এই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জটিল এই অস্ত্রোপচার করতে মহকুমা হাসপাতালে সে রকম পরিকাঠামো না থাকা সত্বেও সফল হয়েছেন চিকিৎসকরা। যার ফলে প্রাণে বেঁচে গেছেন যুবক।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তাহেরপুর থানার বীরনগরের বছর বত্রিশের ওই যুবক গত ২২ ডিসেম্বর সকালে বাইকে চেপে কাজে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে বীরনগরে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। হাতে, পায়ে বা শরীরের বাইরে সেরকম কোন চোট না লাগলেও দুর্ঘটনার কিছু সময় পর থেকেই তাঁর শুরু হয় পেটে অসহনীয় যন্ত্রণা। পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি তাঁকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু সেখানেও যন্ত্রণার উপসম না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় রাণাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। সেখানেই ধরা পড়ে তাঁর দুর্ঘটনার জেরে তৈরি হওয়া শরীরের এই জটিল সমস্যা।

যুবকটির একটি অণ্ডকোষ দুর্ঘটনায় আঘাত পেয়ে পেটের ভেতরে চলে যায়। সেখান থেকে ফের তা স্বাভাবিক স্থানে নিয়ে যাওয়ার মতো অস্ত্রোপচারের পরিকাঠামো এই মহকুমা হাসপাতালে ছিল না। তবুও সেই হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতার বড় কোন সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত না করেই একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। তড়িঘড়ি দুর্ঘটনার দিনই সন্ধ্যায় করা হয় তাঁর অস্ত্রোপচার।

বিষয়টি নিয়ে রাণাঘাট মহকুমা হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক অরূপ মোহন্ত বলেন, ‘সাধারণত এই ধরনের সমস্যা হলে তা পরবর্তী সময়ে আরও জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। অন্ডকোষ অতটা ওপরে উঠে গেলে, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়। যার ফল খারাপ হতে পারে। এক্ষেত্রে আমরা সফল হয়েছি। বুধবার ওই যুবককে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।’

হাসপাতালের সুপার প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, ‘এখন সরকারি হাসপাতালে সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। খুব প্রয়োজন না হলে রোগীকে স্থানান্তরিত না করে আমাদের হাসপাতালেই যাতে সুস্থ করে তোলা যায় সেই চেষ্টাই করা হয়।’

হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পথে ওই যুবক বলেন, ‘যন্ত্রণায় ছটফট করছিলাম। বুঝতে পারিনি কী হয়েছিল! সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের তৎপরতায় এযাত্রায় প্রাণে বেঁচে গেলাম।’