নিউজ পোল ব্যুরো: শান্তিনিকেতনের বিখ্যাত পৌষ মেলায় পার্কিং নিয়ে আবারও বিতর্কের সূত্রপাত। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ইস্যুটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চারচাকা যানবাহন নিয়ে মেলায় আসা পর্যটকরা অবৈধ পার্কিং ও অতিরিক্ত চার্জের কারণে চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। বোলপুরে ঢুকতেই ৫০ টাকা টোল দেওয়ার পর, মেলায় গাড়ি পার্ক করতে আরও দুশো টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এমনকি বাইকের জন্যও ৩০ টাকা পার্কিং চার্জ ধার্য করা হয়েছে। অতিরিক্ত এই চার্জের কোনও যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা না থাকায় পর্যটকরা ক্ষুব্ধ।
অভিযোগ উঠেছে, পার্কিংয়ের বরাত পেয়েছে অবৈধ পুরকর আদায়কারী ব্যবসায়ী নাসির শেখ। এই বিষয়টি নিয়ে পর্যটকরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিশ্বভারতীর মতো একটি প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেওয়া কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পর্যটকরা বলছেন, তাদের জোর করে টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ রাস্তায়, কেউবা মেলা প্রাঙ্গণে এই বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। বছরের শুরুতেই বিশ্বভারতীতে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পূর্বপল্লির পৌষমেলা সর্বদা সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু এবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের টেন্ডারের মাধ্যমে মেলা পরিচালনার সিদ্ধান্ত সবার কাছে অস্বস্তিকর। টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী, মেলায় প্রবেশের জন্য টিকিট কাটতে হবে এবং পার্কিংয়ের জন্য অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে মেলায় আসা সাধারণ মানুষের উপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ পড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা প্রশ্ন তুলেছেন, কাদের স্বার্থে এই টেন্ডার দেওয়া হয়েছে? টেন্ডারের দর স্থির করার সময় সাধারণ মানুষের কথা কি বিবেচনা করা হয়েছে? এই প্রশ্নের জবাব বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত দিতে পারেনি।
কলকাতার সুবিমল বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্মৃতি রায় জানান, পার্কিং রশিদে ২০০ টাকা ভাড়া দেখানো হলেও বিশ্বভারতীর পার্কিংয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। দুর্গাপুরের শ্যামলতনু দে ও সুস্মিতা সাহা জানান, তাঁরা এত উচ্চ পার্কিং ভাড়া কোথাও শোনেননি। সামাজিক মাধ্যমে মানস রায় ও সুকান্ত ঘোষ লেখেন, বিশ্বের চতুর্থ রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত পৌষমেলার গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সর্বস্তরের মানুষের জন্য পার্কিং ভাড়া কমানো এবং অরাজকতা বন্ধ করা উচিত। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর কর্মসচিব অশোক মাহাতোর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি। পার্কিং টেন্ডার পাওয়া বেসরকারি এজেন্সি সংস্থার পক্ষে নাসির শেখ বলেন, টেন্ডার পার্কিং ভাড়া সব কিছুই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ঠিক করে। তাঁরা শুধুমাত্র টেন্ডার পেয়ে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন প্রবেশপথে পার্কিং পরিচালনা করছেন। এদিকে, পার্কিংয়ের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সময় পেরিয়ে গেলেই বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এক প্রকার জুলুম করেই পার্কিংয়ে গাড়ি রাখানো হচ্ছে এবং বাড়তি টাকাও নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।