নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি: হুগলির কোন্নগরে চলছে অবৈধ জলের কারবার। কেউ মাটির তলা থেকে সরাসরি জল তুলে নামি কোম্পানির বোতলে ভরে বিক্রি করছিলেন, আবার কেউ পুরসভার নলবাহিত জলকে জমিয়ে বোতলে ভরে বিক্রি করছিলেন। বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছনো নিয়ে যখন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেও চলছে অবৈধভাবে জলের ব্যবসা – জল চুরি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই অবৈধ জলের ব্যবসায়ীদের ধরলেন কোন্নগর পুরপ্রধান স্বপন দাস।
অবৈধভাবে জল ব্যবহার করে তা বিক্রি করে অসাধু উপায়ে ব্যবসা চালাচ্ছিলেন কিছু ব্যবসায়ী। এই খবর পৌঁছয় পুরসভার কাছে। শনিবার সকালে জল চুরি রুখতে কোন্নগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা আর এন টেগর (R.N.Tegor) রোডে পৌঁছে যান পুরপ্রধান স্বপন দাস। সেখানে গিয়ে অবৈধভাবে জল কারবারীদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এফআইআর করা হবে বলে জানান।
চেয়ারম্যান জানান, শহরে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছনোর জন্য একাধিক কাজ শুরু করেছে পুরসভা। তারপরেও জানা গেছে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পৌঁছাচ্ছে না প্রত্যেকটি বাড়িতে। সেই খোঁজ নিতে গিয়েই জানা যায় এরকম অনেকে রয়েছেন যারা নিজেদের বাড়িতে বোরিং মেশিন বসিয়ে মাটির তলা থেকে অবৈধভাবে জল তুলে নিচ্ছেন! তাঁদের কাছে কোন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই তাঁরাই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে রয়েছে যাঁরা পুরসভার জলকেই স্টোর করে তা বোতলে ভরে বিক্রি করছেন। এটা খতিয়ে দেখতে গিয়ে একেবারে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে ওঠে। যা ধরা পড়ে তা অভাবনীয়। জল নিয়ে ব্যবসা হবে আর শহরবাসী জল পাবে না এটা চলতে পারে না। এক একদিনে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার লিটার জল তুলে নিচ্ছে! কোনরকম বিশেষ প্রক্রিয়াকরণ ছাড়াই সেই জলকে বোতলে ভরে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে কম দামে। একদিকে সেই জল কতটা মানুষের শরীরের উপযোগী তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
জল ব্যবসায়ী অরুণ মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘আজ থেকে বছর চারেক আগে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা খরচ করে তিনি এই জলের প্ল্যান্ট বসিয়েছিলেন বাড়িতে। মাটি থেকে জল উত্তোলন করে সেই জলকে বোতলে ভরে বাজারে পাঠানো হচ্ছিল। মাত্র ১০ টাকায় জল দেওয়া যাচ্ছিল কম টাকায় জল দেওয়ার কারণে তাঁর জলের চাহিদাও বেশি।’
চেয়ারম্যান যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছান তখন টনক নড়ে তাঁদের। এরকম জলের কারবার কোন্নগরে আরও অনেক জায়গায় চলছে। যাঁরা প্লান্ট বসিয়ে অবৈধভাবে জল তুলে বিক্রি করছেন, তাঁদের জল কোথায় টেস্ট হয় প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ‘শ্রীরামপুরে কোনও এক কেমিস্ট রয়েছেন, যিনি এই জল পরীক্ষা করে দেন। জল চুরি রুখতে আগামী দিনে এই অভিযান আরও চলবে এমনটাই জানিয়েছে কোন্নগর পুরসভার পুরপ্রধান।