নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আজ বৃহস্পতিবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আদালতে রিপোর্ট পেশ করলো রাজ্য। রিপোর্ট দেখে ‘অসন্তুষ্ট’ প্রধান বিচারপতি। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট পেশ করল রাজ্য। রিপোর্ট দেখে, ‘আগামী বর্ষার আগে কিছু তো করুন। এখনই শুরু না করলে কিছুই করতে পারবেন না’ – মন্তব্য প্রধান বিচারপতির।
রাজ্যকে প্ল্যান বাস্তবায়নে আরও বেশী আন্তরিক ও সিরিয়াস হতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘এই রিপোর্টে লেখা আছে যে বন্যার পর আপনারা ক’টা শাড়ি, বিছানার চাদর, লুঙ্গি, শিশু খাদ্য বিতরণ করেছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা কিভাবে করেছেন সেটা লেখা আছে। কিন্তু মাস্টার প্ল্যান কিভাবে কার্যকর হবে বা কিভাবে এই বন্যা প্রতিরোধ করা হবে তার বিষয়ে কিছুই লেখা নেই। পরের বন্যার জন্য আগাম কী প্ল্যান আছে? এই কাজ করতে গেলে আপনাদের অনেক কাজ করতে হবে। যন্ত্র কোথায় বসবে? কতজনকে পুনর্বাসন দিতে হবে? এলাকা দখল মুক্ত করতে হবে। এই সব তথ্য কোথায়?’ এর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো।
৬ সপ্তাহের মধ্যে ফের রাজ্যের রিপোর্ট তলব করলেন প্রধান বিচারপতি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কতদিনের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে সেই বিষয়ে ৬ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের সেচ দফতরের সচিবকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ।
আবেদনকারীর আইনজীবী শংকর দলপতি বলেন, ‘১৯৫৯ থেকে ঘাটালের এই বন্যার সমস্যা। কেন্দ্র ও রাজ্যের পঞ্চাশ শতাংশ করে আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করার কথা। কিন্তু কেন্দ্র অর্থ দিলেও রাজ্য বিগত ৪০ বছর ধরে কিছু করছে না!’
এরপরেই প্রধান বিচারপতি রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেন। রাজ্য এবং ক্যাগ আলাদা আলাদা রিপোর্ট এদিন আদালতে জমা করেছে। তাতেই ক্ষুব্ধ হন প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কবে শেষ হবে? কিভাবে বন্ধ করা যাবে বন্যা? রাজ্যের রিপোর্টে ক’টা লুঙ্গি দেওয়া হয়েছে, কজনকে খাবার দেওয়া হয়েছে সেই রিপোর্ট। কিন্তু পাকাপাকি ভাবে কিভাবে বন্যা আটকানো যায় সেই কাজ কতটা কী হয়েছে? অবৈধ দখলদার সরানো, এবং নদীবাঁধ তৈরির কাজ কি হল?’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান মূলত পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়া ও হুগলির বন্যা পরিস্থিতি আটকাতে ঘোষণা করা হয়েছিল। নদীবাঁধে ভাঙন আটকাতে নতুন নদীবাঁধ তৈরি, পাকা ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করার কথা ছিল। কিন্তু বন্যা হলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় খালি সেটাই জানানো হয়েছে।