নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতাঃ- সাদার্ন এভিনিউ এর নব নালন্দা স্কুল এর কাঁচ ভেঙে বিপত্তি। স্কুল শুরুর আগেই উপরের দিকের কাঁচ ভেঙে পড়ে জখম অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই ছাত্র । নাম প্রিয়ম ও সৃঞ্জয় । স্কুলের বিরুদ্ধে মেনটেনেন্সের অভাবের অভিযোগ অভিভাবকদের। গুরুতর আহত অবস্থায় এক ছাত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্কুলে প্রেয়ার লাইন হওয়ার সময় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। আচমকাই ওপর থেকে একটি কাচের প্যানেল ভেঙে পড়ে পড়ুয়াদের মাথার ওপরে। তাতেই জখম হয় অষ্টম শ্রেণি ও নবম শ্রেণির দুই পড়ুয়া। তাদের একজনকে ঢাকুরিয়ার মনিপাল হাসপাতালে ও অপরজনকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে এক অভিভাবিকার তরফে জানা গেছে একটি ছাত্রের মাথায় ৪০টি সেলাই পড়েছে। অপর পড়ুয়ার খবর পাওয়া যায়নি। অভিভাবকদের অভিযোগ প্রতিবছর কুলের মেইন্টেনেন্স চার্জ বৃদ্ধি করা হলেও সেভাবে স্কুলে কোন পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করা হয় না যার জেরে এই দুর্ঘটনা। যখন এই দুর্ঘটনাটি ঘটে তখন বাইরে অনেক অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। তাঁরাও শব্দটি পান কিন্তু স্কুলের তরফে কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ।
এরপরেই অভিভাবকরা দেখতে পান দু’টি পড়ুয়াকে স্কুলের হুইল চেয়ারে বসিয়ে বাইরে নিয়ে আসা হচ্ছে। তাদের শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তারপরে ট্যাক্সিতে করেই তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে পড়ুয়া সহ অভিভাবকদের মনে। স্কুলের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
স্কুলের প্রিন্সিপাল নিউজ পোলের সম্পাদক শৌভিক পাণ্ডাকে জানিয়েছেন, আজ সোমবার নব নালন্দা স্কুলে যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা একটি নিছকই দুর্ঘটনা। তিনি এর পাশাপাশি অভিভাবকদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘স্কুলের রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট নজর রাখি। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর দায়িত্ব আমার। আপনারা কাল থেকে নিশ্চিন্তে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠতে পারেন।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, কলকাতার সাদার্ন অ্যাভিনিউ এলাকার নব নালন্দা স্কুলের এই ঘটনায় অভিভাবকদের সঙ্গে আগামীকাল মঙ্গলবার একটি বৈঠক করা হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, এদিনের ঘটনায় এক পড়ুয়া প্রিয়ম দাস গুরুতর ভাবে জখম হয়েছে। তার মাথায় ৪০ টি সেলাই পড়েছে। ওপর পড়ুয়া সৃঞ্জয় রায় তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সৃঞ্জয়ের মা বর্ণালি রায় জানান, ‘প্রতিদিনের মত আজকেও ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ এক অভিভাবক ফোন করে বললেন ছেলের গায়ে কাচ ভেঙে পড়েছে! স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ক্লাসে পাঠিয়ে দেয়। পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ইনজেকশন সহ প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়।’
অপরদিকে, এই ঘটনার দায় স্বীকার করে প্রিন্সিপাল বলেন, ‘চারতলার ৫০৩ নম্বর রুমের জানলাটি বন্ধই থাকে। আজ একজন পড়ুয়া সেই জানলাটি খুলে দেওয়ার ফলে আচমকাই কাচ ভেঙে পরে। সেই সময় নীচে অষ্টম ও নবম শ্রেণির প্রার্থনা চলছিল। কাচের আঘাতে জখম হয় দুই পড়ুয়া। তবে মঙ্গলবার থেকে স্বাভাবিক ভাবেই স্কুলের ক্লাস হবে যে জায়গায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ওই জায়গায় নেট লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে ভবিষ্যতে এই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটলেও পড়ুয়া বা স্কুলের অন্য কেউ যেন বিপদে না পরে।’
এদিন স্কুলের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। স্কুলে নিজস্ব দু’টি অ্যাম্বুলেন্স থাকা সত্ত্বেও চালকের অনুপস্থিতির কারণে জখম পড়ুয়াকে ট্যাক্সি করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। এরপর এক অ্যাম্বুলেন্স চালক দেরি করে আসায় তাঁকে শো-কজ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।