নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রকল্পের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ দিয়ে প্রথমবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হতে পারে শীঘ্রই। যাত্রী পরিবহনের ইতিহাসে এই পদক্ষেপ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি জটিল কাজের পর এটি বাস্তবায়ন হওয়ার পথে। বউবাজারের ধস সমস্যার পর অনেক চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে আজ এই জায়গায় পৌঁছেছে প্রকল্প। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২১ জানুয়ারি রাতে প্রথমবার মেট্রোর চাকা ঘুরবে বউবাজারের নিচ দিয়ে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে। রাত ১১টা নাগাদ সেক্টর ফাইভ থেকে মেট্রো ছুটে মহাকরণ পর্যন্ত যাবে। সারা রাত ধরে ভোর চারটে পর্যন্ত দফায় দফায় চলবে এই ট্রায়াল রান। সোমবার এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের জন্য দুটি সুড়ঙ্গ নির্মাণ হয়েছে। শিয়ালদহমুখী পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। খালি ট্রেন এরই মধ্যে সেই সুড়ঙ্গে নিয়মিত চলাচল করেছে। কিন্তু পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ নিয়ে বউবাজারের ধস সমস্যার কারণে বারবার বিঘ্ন ঘটে। ২০১৯ সালের আগস্টে বউবাজারে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময় প্রথম ধস নামলে কাজ বন্ধ করতে হয়। পরে ২০২২ সালের মে ও অক্টোবরে ফের সমস্যা দেখা দেয়। জল ঢুকে পড়ে সুড়ঙ্গের মধ্যে, ফলে কাজে বিলম্ব হয়। তবে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সম্প্রতি পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার পর তৃতীয় লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এরপর ট্রলি রান হয়েছে কয়েকদিন। আগামী মঙ্গলবার রাতে শুরু হবে ট্রায়াল রান। এটি সফল হলে যাত্রী পরিবহনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের (সিআরএস) ছাড়পত্র পাওয়ার পরই ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ট্রেন চালানো হবে। শিয়ালদহ থেকে হাওড়া ময়দান যাত্রার সময় হবে মাত্র ১১ মিনিট। মেট্রো পরিষেবা আরও উন্নত করতে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হতে পারে। একইভাবে ২৯ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে কেএমআরসিএল। এই সময় সিগন্যালিং সিস্টেম আধুনিকীকরণ ও ট্রায়াল রান চালানো হবে।