নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আরজি কর ধর্ষণ ও হত্যা কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে রাজ্যের আবেদনের মামলায় রাজ্যের এই আবেদনের যোগ্যতা আছে কি না জানতে চায় হাই কোর্ট। এই মামলায় নির্যাতিতার পরিবার ও সঞ্জয় রায়কে যুক্ত করার নির্দেশ হাই কোর্টের। সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি। নির্দেশ বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সাব্বার রাসিদির ডিভিশন বেঞ্চে।
বিচারপতি: এফআইআর হবার পর কলকাতা পুলিশ তদন্ত করছিল তার পর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মত সিবিআইয়ের হাতে মামলা গেলো। তারপর কী হল? জনস্বার্থ মামলা কী এখনও বিচারাধীন?
আবেদনকারী রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, এরপর তদন্ত করে সিবিআই। চার্জশিট দেয় সিবিআই। নিম্ন আদালতের চার্জশিট মোতাবেক মূল অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।
বিচারপতি: নির্যাতিতার পরিবার কী জানে এই মামলার কথা? অভিযুক্তের পরিবারকে এই মামলায় যুক্ত করা হয়েছে?
কিশোর দত্ত: না। কাউকেই মামলায় যুক্ত করা নেই। অভিযুক্তকে আইনজীবী লিগ্যাল এইড থেকে দেওয়া হয়েছিল।
বিচারপতি: তাহলে তুমি কী চাইছো?
কিশোর দত্ত: আমি রাজ্য হিসাবে চাইছি দোষীর সর্বোচ্চ সাজা।
বিচারপতি: আইনি ফরমালিটি মেনে আবেদন করতে হবে তো। নির্যাতিতার পরিবারকে মামলায় যুক্ত করতে হবে। এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বিচারপতি: রাজ্যের কী এই আবেদনের যোগ্যতা আছে? রাজ্য এই মামলায় কিভাবে জড়িত?
কিশোর দত্ত: আমার অধিকার আছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী এই ধরনের মামলায় চারজনের আবেদনের অধিকার আছে। নির্যাতিতা, অভিযুক্ত, তদন্তকারী সংস্থা ও রাজ্য। BNS এর ১৮ নম্বর ধারায় বলা আছে প্রতি হাই কোর্টে একজন করে PP রাখতে হবে। কলকাতা হাই কোর্টে কোনও পিপি নেই। সে এই মামলায় সওয়াল করতে পারে। ডেপুটি সলিসিটর জেনারেলের কোনও লোকাস নেই। লালুর মামলার ক্ষেত্রে পার্থক্য আছে। পটনা হাই কোর্ট বলেছিল সমস্ত স্ক্যামের তদন্ত করতে সিবিআইকে। এখানে নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের এফআইআর হয় যা রাজ্যে করে। এখানে প্রাথমিক দায় রাজ্যের ছিল। পরে সিবিআইয়ের হাতে যাওয়ার পর পুনরায় অভিযোগ দায়ের হয়। তাই রাজ্যের তরফে আবেদন জানান হয়েছে।
সিবিআইয়ের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেন, রাজ্য এই আবেদন করার যোগ্যতা রাখে না। আইন অনুযায়ী রাজ্যের এই আবেদনের অধিকার নেই। রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা নয়। এই মামলায় তার ভূমিকা ছিল প্রথম পাঁচ দিন। এরপর তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যাবার পরে তার আর কোন ভূমিকা নেই। তাই রাজ্যের এই আবেদন অবৈধ। চ্যালেঞ্জে যাওয়ার অধিকার সিবিআইয়ের থাকতে পারে রাজ্যের নয়। আমরা নিম্ন আদালতে এর জন্য সর্বোচ্চ সাজার আবেদন করেছি।