নিউজ পোল বিনোদন ডেস্ক: ‘সকলেই দেখেন দু’হাত তুলে পুরস্কার নিচ্ছি। কিন্তু এই পুরস্কার নিতে আমার সেই অর্থে কোন ইচ্ছেও নেই। তার কারণ, আমি সমাজকে সুন্দর করে গড়ে তোলার কাজ করি। তাই নিজের অতীতের ভুলগুলোকে যাতে আর না করতে হয় তার জন্য় সবসময় সজাগ থেকে কাজ করি। জীবনের শুরুটা আমার প্রথম থেকেই খুব কঠিন ছিল, তাই আমি আজও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে থেকেই কাজ করতে ভালোবাসি।’
‘ভারতীয় যুব ইনস্পিরেশন’ শ্রেষ্ঠ সমাজসেবিকা অ্যাওয়ার্ড পেয়ে এমনি মন্তব্য করলেন সমাজসেবী তথা অভিনেত্রী পায়েল সরকার। স্কুল জীবন শেষ করার পর সাইকোলজিতে অনার্স নিয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পাশ করেন এমএসসি নিয়ে। যদিও স্নাতকে থাকার সময়েই শুরু হয় তাঁর অভিনয় জীবন, তিনি অবশ্য নিজে জানান কখনও কোনদিন তিনি অভিনেত্রী হবেন এটা স্বপ্নেও ভাবেননি। কিন্তু অভিনয় জীবনেও সফল হয়েছেন এই পায়েল সরকার। আর অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গেই রীতিমতো উপস্থাপনার শিক্ষাটাও লাভ করেছিলেন তিনি। ‘বাড়ির সকলের ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে আমি সংবাদ পাঠিকা হবো। কিন্তু সেসব লেখা ছিল না আমার কপালে, আমার কপালে জুটল অন্য আরেক সুযোগ। ডাক এল মডেলিংয়ের জন্য, এই ক্ষেত্রে কিন্তু বাড়ির সকলেরই ছিল অমত, আর সেই অমতকে তোয়াক্কা না করেই আমি মডেলিং শুরু করি। শুধু তাই নয়, একেবারে ম্যাগাজিনের ব্যাক কভারেও ছবি বের হয় আমার। যা নিয়ে এসে বাড়িতে লুকিয়ে রাখি আমি।’

এখানেই হয়তো সেদিন থেমে যেতে পারতো তাঁর জীবন, পায়েল পিছপা না হয়ে মডেলিংয়ের কাঁধে ভর করেই সোজা পাড়ি দিলেন মুম্বইয়ে। চুটিয়ে কাজ করতে শুরু করলেন তিনি আর এরপরই ডাক পড়ল টলিপাড়ায় – লিড রোল , তাঁর কাজই তাঁর পরিচয় বুঝিয়ে দিল সকলকে। ফলে পিছনে ফিরে আর তাকাতে হল না আজকের এই পায়েল সরকারকে। তিনি জানান, ‘ছোটবেলায় মা বাবার কাছে যাঁর গল্প শুনেছিলাম বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই তিনিই আমার জীবনের মূল প্রেরণা হয়ে দঁড়ালেন – মাদার টেরেজা। সুদূর ইতালি থেকে শহর কলকাতায় এসে তাঁর কাজের মধ্যে দিয়ে তিনি যে অনন্য সৃষ্টি করে গিয়েছেন সেই গল্প শুনে এবং দেখে আমার জীবনের মোড় ঘুরে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত গোটা বিশ্বে অনেক মহিলা আছেন যাঁরা আজও একাধারে অসহায় অন্যদিকে একাকিত্বে ভোগেন প্রতি মুহূর্তে। কোথাও যেন মনে হয় সেইসব মহিলারা যেন আজও অন্ধকারেই থেকে গিয়েছেন আর তাঁদেরকে সামনের সারিতে তুলে আনার জন্যই আমিও আর পাঁচজনের মতোই অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছি। এটা পরিষ্কার আজ যেভাবে গোটা সমাজ এগিয়ে চলেছে তাতে ভবিষ্যতে এর ফল যে কত খারাপ হবে তা অন্তত আমরা হারে হারে টের পাই যখন এই অবহেলিত মহিলাদের নিয়ে সমাজে কাজ করতে যাই। ভবিষ্যতে মানুষকে সঙ্গে নিয়েই পথ চলবো এবং কাজ করবো এটাই আমার জীবনের অঙ্গীকার। আমি মনে করি কোন নির্দিষ্ট পুরস্কার দিয়ে কাউকে হয়তো চিহ্নিত করা যায় কিন্তু পুরস্কারের মূল্যটা তখনই সঠিক ভাবে বিবেচিত হয় যখন সেই কাজের ধারাবাহিকতাকে ধরে রাখা হয়।’
উল্লেখযোগ্য কাজ:-
নেহাল দত্ত পরিচালিত পলাতক, যেখানে অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর সেটাই তাঁর কাছে আজ ও বড় সম্পদ হয়ে আছে। ভালাবাসা ডট কম, বেনে বউ, প্রথমা কাদম্বিনী, টাপুর টুপুর, জয় বাবা লোকনাথ। বর্তমানে কাজ চলছে জয় জগন্নাথ।