ভাবছেন বিয়ে করবেন না? কিন্তু তাতেও দিতে হবে কর

breakingnews বিনোদন

নিউজ পোল বিনোদন: বিয়ে করবেন না? অনিচ্ছার সত্ত্বেও আজব কারণে দিতে হবে ট্যাক্স বা কর! হ্যা ঠিকই শুনছেন। খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে প্রসাধন সামগ্রী, এমনকি শিক্ষাক্ষেত্রেও ট্যাক্স রয়েছে এমন দেশের সংখ্যা পৃথিবীতে অধিক। আবার বিশেষ কোন কোনও ক্ষেত্রে ট্যাক্স মুকুব করে দেশ এমন নিদর্শন রয়েছে অজস্র। কিন্তু ট্যাক্স দেওয়ার এমন কোনও কারণ শুনেছেন কি? যা শুনলে প্রথমত হতে হবে অবাক। দ্বিতীয়ত আপনাকে ভাবতেই হবে, ঠিক কোন কারনে এই সমস্ত বিষয়ে ট্যাক্স বসাচ্ছে দেশ? কোনটা মজার কোনটা আবার বিরক্তির হতে পারে আপনার কাছেও। আজকের বিশেষ এই নিবেদনে রইল তেমনই কয়েকপ্রকার ট্যাক্সের কথা, যা জানলে হয়তো চিন্তায় পরতে পারেন আপনিও।

সেই প্রাচীনকাল থেকে ট্যাক্স নিয়ে দেশের মানুষের নানা রকম আপত্তি সে তো ইতিহাসেই ব্যাখ্যা রয়েছে। বিভিন্ন দেশের ইতিহাস কাহিনী ঘাটলেই বোঝা যায় কত প্রকার টেক্সের উল্লেখ রয়েছে সেখানে। তবে আধুনিক দুনিয়ায় টেক্সের প্রকারভেদ বদলেছে, ভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন কারণে দিতে হয় ট্যাক্স। ইচ্ছা বা অনিচ্ছার সত্ত্বেও আপনাকে দেশের নিয়ম রক্ষার্থে দিতে হয় ট্যাক্স। যেমন ধরুন মোবাইল রিচার্জ করার সময় নিজের টাকা খরচ করলেও আপনাকে দিতে হয় অল্প কিছু ট্যাক্স। কিংবা প্রত্যেকবার ওভারব্রীজ ক্রস করার সময়েও আপনাকে দিতে হয় ট্যাক্স। আবার বিভিন্ন রকম অবাক করা ট্যাক্স চালু রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

অবাক করা ট্যাক্সের মধ্যে একটি হল ব্যাচেলর ট্যাক্স। আপনার বিয়ে করতে ইচ্ছে না করলেও দেশকে দিতে হবে সেই মাশুল। বিয়ে না করার দরুন অবিবাহিত থাকাকালীন আপনাকে নিয়মিত দিতে হবে ট্যাক্স। কারণ একটাই, রাষ্ট্র চায় আপনি বিয়ে করুন, আপনার সন্তান হোক। এই প্রকার কর ১৮২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্য আরোপ করা হয়। এই করের নির্ধারিত মূল্য বছরে এক ডলার।২১ বছর বয়স হলে বিয়ে না করলেই আপনাকে নিয়মিত দিতে হবে কর। জার্মানি, ইতালি, সাউথ আফ্রিকাতেও চালু হয় এই ব্যাচেলর ট্যাক্স। তবে এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো এই কর শুধুমাত্র দিতে হতো পুরুষদের। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই কর আরোপ করা হতো না। এই বিশেষ প্রকার কর বাতিল হয়নি, তবে প্রয়োগ নেই আজও।

অবাক করা আরেক ট্যাক্স হলো ব্রেস্ট ট্যাক্স বা স্তন কর। যা ছিল ভারতের বর্তমান কেরালা রাজ্যে। ১৮৫৯ সালে ব্রিটিশ আমলে এই কর রহিত হয়। সেই সময় এই করের নাম রাখা হয় মুলাককরম। সে সময় ভারতে নিম্নবর্ণের নারীরা স্তন ঢাকতে চাইলে কর দিতে হবে। পরবর্তীতে প্রতিবাদে একজন নারী তার স্তন কেটে ফেলেন।
বাথরুমে পয়ঃনিষ্কাষণেও দিতে হত কর, ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে সে কথাও। খ্রিষ্টের জন্মের পর ৬৯ থেকে ৭৯ সাল পর্যন্ত রোমান রাজা ভেস্পাসিয়ান এর আমলে চালু করা হয় এই ব্যবস্থা। বর্তমানেও ভিন্ন নামে রয়েছে এই ট্যাক্স, যার নাম টয়লেট ফ্ল্যাশ ট্যাক্স। জল ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে দেশের সরকার উদ্যোগ নেয় এই ট্যাক্সটি চালু করার। ফ্ল্যাশ টয়লেটে নির্ধারিত পরিমাণের বেশি জল ব্যবহার করলেই দিতে হয় ৫ ডলার। এই অর্থ পয়ঃনিষ্কাষণের উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়।

আপনি দাড়ি রাখবেন কি না , সে কথাও এক সময় ছিল রাষ্ট্রের পছন্দ অপছন্দের বিষয়। আপনি যদি সেসময় রাশিয়ার বাসিন্দা হতেন তবে আপনাকেও সরকারের ইচ্ছেমতো বদলাতে হত নিজের চেহারা। এর বিশেষ ট্যাক্স রাশিয়ায় জার পিটার দ্য গ্রেট ১৬৭২ সালে চালু করেন, যার নাম বিয়ার্ড ট্যাক্স। ১৭২৫ সাল পর্যন্ত কাগজে কলমে চালু ছিল এই ব্যবস্থা। যারা দাড়ি কামাবেন না, তাদের ওপর দেশের তরফ থেকে বছরে ধার্য করা হতো ৫০ রুবল। তবে দাড়িওয়ালা বিশিষ্টজনের অনেকেই এই কর দিতেন না এবং দেশের তরফেও জোর দেওয়া হতো না সে বিষয়ে।

তেমনই ইংল্যান্ডে বাড়ির জানলা গুনে ট্যাক্স আদায় করা হতো যারনাম ছিল উইন্ডো ট্যাক্স। ১৬৯৬ সালে শুরু করা হয় এটি। পরবর্তীতে নানা অসুবিধার কারণে বাতিল করে দেওয়া হয় আইনটিকে। ১৮৫১ সালে এই আইন বাতিল হয়। ইংল্যান্ডেই আরেকটি অদ্ভুত কর চালু ছিল ১৮৫১ সালে।

দশম শতকে সেনাবাহিনীতে যেতে না চাইলেই আরোপ হতো কাওয়ার্ড ট্যাক্স, অর্থাৎ ভীরুতার কর। এটি চালু করেন ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম হেনরি। এককালে ইংল্যান্ডে চালু হয় নিউজপেপার ট্যাক্স। সে সময় ধারণা ছিল, যারা সংবাদপত্র পড়ে তারা কর দিতে সক্ষম। কিন্তু এর ফলেই পরবর্তীতে কমে যায় পত্রিকা বিক্রি। ফলত ১৪ বছর পর বাধ্য হয়ে বাতিল করতে হয় আইনটি। এমনই বহু কর শুরু হয় অতীতে আবার সময়ের সাথে সাথে বাতিল হয়ে যায়।