নিউজ পোল ব্যুরো: মহারাষ্ট্রের সোলাপুর জেলায় গুইলেন-বারে সিনড্রোম (জিবিএস)-এ আক্রান্ত হয়ে একজন রোগী মারা গেছেন, যা রাজ্যে এই রোগের কারণে প্রথম সন্দেহভাজন মৃত্যুর ঘটনা। ওই ব্যক্তি পুনে থেকে ব্যক্তিগত কাজে তাঁর নিজ গ্রামে গিয়েছিলেন। সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে তিনি ১৮ জানুয়ারি সোলাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। শুরুতে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়, পরে কিছুটা উন্নতির পর তাঁকে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। তবে, শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। এরপর তাঁকে পুনরায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই তিনি মারা যান।
সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, সোলাপুরের ডিন ড. সঞ্জীব ঠাকুর বলেন, ‘৪০ বছর বয়সী এই রোগী একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান এবং তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আমাদের কাছে আনা হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, গুইলেন-বারে সিনড্রোম (জিবিএস) রোগের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্লিনিক্যাল ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে রোগী জিবিএস সন্দেহ করেছিলেন এবং পাঁচদিন চিকিৎসাধীন থাকা সত্ত্বেও মারা যান।’ মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণে ময়নাতদন্তের পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল পোস্টমর্টেমও করা হয়েছে। ড. ঠাকুর বলেন, ‘আমরা জীববিজ্ঞানী ও প্যাথলজিস্টসহ চারজনের একটি দল গঠন করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি। ক্লিনিক্যাল রিপোর্ট ও প্রাথমিক ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জিবিএসকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।’
সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (CSF) ও রক্তের নমুনা পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশনের (PCR) জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও মাইক্রোবায়োলজিকাল এবং হিস্টোপ্যাথলজি পরীক্ষার রিপোর্ট বের হওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত করা যাবে। রিপোর্ট আসতে পাঁচ থেকে ছয় দিন সময় লাগবে। পুনেতে গুইলেন-বারে সিনড্রোমে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১০১ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ জন পুরুষ এবং ৩৩ জন নারী। বর্তমানে ১৬ জন রোগী ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রয়েছেন।
পুনে পৌর কর্পোরেশন এবং র্যাপিড রেসপন্স টিম (আরআরটি) ক্ষতিগ্রস্ত সিংহগড় রোড এলাকায় তদারকি চালিয়ে যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত পুনে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের আওতায় ১৫,৭৬১টি, পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের আওতায় ৩,৭১৯টি এবং জেলার গ্রামীণ এলাকায় ৬,০৯৮টি বাড়ি সহ মোট ২৫,৫৭৮টি বাড়ি জরিপ করা হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ‘পুনেতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০১ অতিক্রম করেছে। সোলাপুরে সন্দেহভাজন মৃত্যুর ঘটনাটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।’