মা উড়ালপুলে গতিসীমা লঙ্ঘন

কলকাতা শহর

নিজস্ব প্রতিনিধি কলকাতা: কলকাতার অন্যতম ব্যস্ততম পথ মা উড়ালপুল। প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি এখানে চলাচল করে, ফলে প্রায়শই ঘটে পথ দুর্ঘটনা। এসব রোধে প্রশাসন নানা প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে স্পিড চেকার ও সিসিটিভি ক্যামেরা। সাধারণ নাগরিকরা যদি এই উড়ালপুলে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাঁদের জরিমানার মুখে পড়তে হয়। কিন্তু আইন রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যরাই যদি আইন ভাঙেন, তাহলে কী হবে?

সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে খোদ কলকাতা পুলিশের গাড়ি গতিসীমা লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানার কবলে পড়েছে। লালবাজারের বসানো স্পিড সেন্সিং ক্যামেরা সেই আইন ভঙ্গের প্রমাণ তুলে ধরেছে। ২০২৪ সালের শেষ দিকে, কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক অফিসার জরুরি কাজে মা উড়ালপুল ধরে দ্রুত অফিসে পৌঁছতে চেয়েছিলেন। সময় বাঁচানোর জন্য তিনি গাড়িচালককে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর নির্দেশ দেন। চালকও সেই নির্দেশ মানতে গিয়ে উড়ালপুলে ঝড়ের গতিতে গাড়ি চালান। তবে গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই প্রযুক্তির নজরে ধরা পড়ে যান তাঁরা। মা উড়ালপুলে গতিসীমা লঙ্ঘনের কারণে সরকারি গাড়ির বিরুদ্ধে ১ হাজার টাকা জরিমানার বার্তা এসে যায়। এতেই শেষ নয়। জরুরি দায়িত্বে দ্রুত পৌঁছতে গিয়ে পুলিশের গাড়ি টানা তিনবার স্পিড লিমিট ভেঙেছে— প্রথমবার মা উড়ালপুলে, দ্বিতীয়বার এজেসি বসু রোড উড়ালপুলে, তৃতীয়বার ফের গতিসীমা লঙ্ঘনের দায়ে- এই তিনবারের জরিমানার মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার টাকা। এতদিন পুলিশের কেউ কল্পনাও করতে পারেননি যে তাঁদেরই সরকারি গাড়ি এভাবে জরিমানার কবলে পড়তে পারে।

পুলিশ অফিসার শেষমেষ লোক আদালতে গিয়ে জরিমানার টাকা মেটান। লোক আদালতের নিয়ম অনুযায়ী, সেখানে জরিমানা জমা দিলে ৫০ শতাংশ ছাড় মেলে। ফলে ৩ হাজার টাকার বদলে মাত্র ১৫০০ টাকা দিয়ে জরিমানা মিটিয়ে দেন তিনি। এই ঘটনা পুলিশের ভেতরে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। এতদিন সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেই ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের কারণে জরিমানার ঘটনা ঘটত, কিন্তু এবার প্রযুক্তির চোখ ফাঁকি দিতে পারেনি খোদ পুলিশের গাড়িও।