“গঙ্গাসাগর” এসে পড়ল কুম্ভমেলায়

দেশ

নিউজ পোল ব্যুরো: প্রেম কখনও হারিয়ে যায় না, প্রেম কখনও ভঙ্গ হয় না, কারণ, প্রেমের শেষ নেই। কেউ হারিয়ে যায় আবার কেউ হারিয়ে গিয়েও ফিরে আসে। কিন্তু সেই হারানো ব্যক্তির ফিরে আসা কি সত্যি? সেই একই চেহারা, সেই একই চিন্হ…নাকি এটি কেবল এক মনোরম সংকল্পের পরিণতি ?

কথায় আছে, “কুম্ভমেলায় হারিয়ে যাওয়ার রীতি নাকি দীর্ঘদিনের।” অর্থাৎ, কুম্ভমেলায় আসা কোনো ব্যক্তি যদি হঠাৎ হারিয়ে যান, তবে তাঁকে খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। কিন্তু এই মহাকুম্ভ আবার আরেকটা রীতিও রয়েছে — হারিয়ে যাওয়ার ২৭ বছর পর, সেই হারানো ব্যক্তি নিজের প্রিয়জনকে আবার খুঁজে পেতে পারেন। এটি একটি অদ্ভুত ও রহস্যময় ধারণা, যেখানে বলা হয় যে, সময়ের পরিক্রমায়, দুটি হারানো আত্মা একদিন, কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে, হঠাৎ একে অপরের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হতে পারে। একেবারেই সত্যি।

২৭ বছর আগে, ১৯৯৮ সালে পাটনা যাওয়ার পথে এক ব্যক্তির হটাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা একটি রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গঙ্গাসাগর যাদব নামে ওই ব্যক্তি তাঁর পরিবার, স্ত্রী, দুই সন্তানকে ছেড়ে হঠাৎ গায়েব হয়ে যান। কিন্তু দীর্ঘদিন পরে তাঁর দেখা মেলা প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে। না, তিনি আর গঙ্গাসাগর নন, তিনি এখন বাবা রাজকুমার নামে অঘোরী এক সাধু। গঙ্গাসাগর-এর এক আত্মীয় সম্প্রতি মহাকুম্ভ মেলায় গিয়েছিলেন বাবা রাজকুমারের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু তিনি বাবা রাজকুমারকে দেখে চমকে ওঠেন।

তাঁর চেহারা অবিকল গঙ্গাসাগরের মতোই। গঙ্গাসাগরের সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়ে তিনি পরিবারের সদস্যদের ছবি তুলে পাঠান। সেই ছবির ভিত্তিতেই গঙ্গাসাগরের স্ত্রী ও সন্তানেরা মহাকুম্ভে ছুটে যান। গঙ্গাসাগরের স্ত্রী বলেন, “আমি নিশ্চিত বাবা রাজকুমারই আমার স্বামী গঙ্গাসাগর। তিনি আরও জানান রাজকুমারের মতোই তাঁর স্বামীর বড় দাঁত, কপালে কাটা দাগ ও হাঁটুতে দাগ রয়েছে। তবে বাবা রাজকুমার এই দাবি অস্বীকার করেছেন। তিনি নিজেকে গঙ্গাসাগর নয়, রাজকুমার বলে পরিচয় দেন। কিন্তু গঙ্গাসাগরের পরিবার পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছে, তাঁরা চায় ডিএনএ পরীক্ষা হোক, যাতে সত্যিটা জানা যায়।

এখন অপেক্ষা ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল কি আসে। ২৭ বছরের পুরোনো প্রেম সত্যিই কি ফিরিয়ে আনতে পারবে অতীতের সেই স্মৃতি ? হয়তো আজও কেউ হারিয়ে গেলে আবার সে ফিরে আসতে পারে। কিন্তু রয়ে যায় এক প্রশ্ন – এই ফিরে আসা কি সঠিকভাবে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে? অপেক্ষা এখন সেই সময়ের। রাজকুমার কি ফিরে যাবে গঙ্গাসাগর হয়ে ফের নিজের ডেরায় নাকি অঘোরি সাধু হয়েই কাটিয়ে দেবে জীবনের শেষ অধ্যায়,এটাই এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে মহাকুম্ভ মেলায়।