নিউজ পোল ব্যুরো: ১৮৫৪ সালের কথা। প্রথমবারের মতো হাওড়া(Howrah Station) থেকে হুগলির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল একটি ট্রেন (Train)। ৯১ মিনিটের এই যাত্রা শুধু এক নতুন দিগন্তের সূচনা নয়, ভারতের রেল ইতিহাসে (Indian Railway History) এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠেছিল। সেই সময় থেকেই পথ চলা শুরু করে হাওড়া স্টেশন (Howrah Station)। আজকের দিনে এটি ভারতের অন্যতম ব্যস্ততম রেল স্টেশনগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে প্রতিদিন প্রায় দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন। বর্তমানে হাওড়া স্টেশনে ২৩টি প্ল্যাটফর্ম (Platform) রয়েছে, যা ভারতের মধ্যে সর্বাধিক। স্টেশনটির ১ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ওল্ড কমপ্লেক্সে (Old Complex) এবং ১৭ থেকে ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম নিউ কমপ্লেক্সে (New Complex) অবস্থিত। তবে আপনি কী কখনও খেয়াল করেছেন হাওড়া স্টেশনে নেই ১৬ নম্বর প্লাটফর্ম।
আরও পড়ুন:- https://thenewspole.com/2025/02/15/howrah-station-15-platform-expansion-24-coach-trains/

কিন্তু কেন? এর কারণ হল, ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মের জায়গাটি ‘জিরো মাইল’ (Zero Mile) হিসেবে পরিচিত। এটি শুধুমাত্র পণ্য পরিবহণের (Goods Transport) জন্য ব্যবহৃত হয়, যাত্রীবাহী কোনও ট্রেন এখানে আসে না। ঐতিহাসিকভাবে বলা হয়, ১৮৫৪ সালের ১৫ আগস্ট এখান থেকেই প্রথম ট্রেনটি হুগলির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল। সকাল ৮:৩০-এ ট্রেনটি ছাড়ার কথা থাকলেও, প্রথম দিনেই ২ ঘণ্টা দেরি হয়।১৯০৫ সালে হাওড়া স্টেশনে(Howrah Station) নতুন ছ’টি প্ল্যাটফর্ম যোগ করা হয়, ফলে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় সাতটিতে। এরপর, ১৯৮৪ সালে এটি বেড়ে হয় ১৫টি। ১৯৯২ সালে নতুন টার্মিনাল (New Terminal) তৈরি হয় এবং ২০০৯ সালে প্ল্যাটফর্ম সংখ্যা বাড়িয়ে ২৩টি করা হয়। বর্তমানে, এখানে প্রতিদিন ৪৫০টি সাবার্বান (Suburban) এবং ১০৭টি দূরপাল্লার (Long Distance) ট্রেন চলাচল করে।

হাওড়া স্টেশনের(Howrah Station) আরেকটি পরিচিত প্রতীক হলো ‘বড় ঘড়ি’ (Big Clock)। ১৯২৬ সালে লন্ডনের এডওয়ার্ড জন ডেন্ট (Edward John Dent) সংস্থার তৈরি এই বিশাল ঘড়িটি স্টেশনে স্থাপন করা হয়েছিল। কলকাতার খ্যাতনামা ঘড়ি ব্যবসায়ী সংস্থা ‘রায় ব্রাদার্স কোম্পানি’ (Ray Brothers Company) এটি স্থাপনের দায়িত্ব পায়। ঘড়িটির বিশেষত্ব হল—এর ডায়াল (Dial) ৩ ফুট ৯ ইঞ্চি, বড় কাঁটা ২ ফুট এবং ছোট কাঁটা ১.৫ ফুট লম্বা। প্রথমে এটি সম্পূর্ণ মেকানিক্যাল (Mechanical) ছিল, তবে ১৯৭৫ সালে এটি ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল (Electro-Mechanical) ঘড়িতে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে এটি স্বয়ংক্রিয় ব্যাটারিচালিত (Battery Operated) ঘড়ি।
নিউজ পোল বাংলা ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:- https://www.facebook.com/share/164mWXbsyp/
বিগত শতাব্দীর পরতে পরতে বহু ঘটনার সাক্ষী এই ঘড়ি। একসময়ে স্টিম ইঞ্জিন (Steam Engine) যুগের ট্রেন থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক মেট্রো রেল (Metro Rail) পর্যন্ত এর সময় পরিমাপ করেছে। শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও, স্টেশনে(Howrah Station) অপেক্ষারত বহু মানুষের জন্য এটি আজও সময় জানানোর অন্যতম মাধ্যম। মোবাইল ফোনের যুগেও এই ঘড়ির জনপ্রিয়তা কমেনি।