নিউজ পোল ব্যুরো: কানাডার রাজনৈতিক মঞ্চে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর মার্ক কার্নি (Mark Carney) এবার কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হতে চলেছেন। রবিবার লিবারেল পার্টি (Liberal Party) তাঁকে তাদের নতুন নেতা হিসেবে নির্বাচিত করেছে, যা জাস্টিন ট্রুডোর (Justin Trudeau) উত্তরসূরি হিসেবে তাঁর যাত্রার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। জানুয়ারি মাসেই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। এরপর থেকেই নতুন নেতার খোঁজ চলছিল, এবং শেষ পর্যন্ত কার্নিই দলে শীর্ষস্থান লাভ করলেন (US Trade War। তবে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী (Interim Prime Minister) হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
আরও পড়ুন:- Justin Trudeau: জাস্টিন ট্রুডোর বিদায়, বুড়ো বয়সে কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন কে?
প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণের ঘোষণা আসার পরই মার্ক কার্নি খোলাখুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (United States) প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। বাণিজ্য নীতি এবং অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্রাম্পের অতীত কর্মকাণ্ডকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন কার্নি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্ক (Tariffs) কানাডার অর্থনীতিকে আঘাত করেছে এবং এটি দেশটির ব্যবসা, শ্রমিক এবং সাধারণ নাগরিকদের ক্ষতির কারণ হয়েছে। কার্নির বক্তব্য, “আমাদের অর্থনীতিকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই চেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমাদের উৎপাদন, বাণিজ্য এবং জীবনযাত্রার ওপর তিনি অযৌক্তিক শুল্ক বসিয়েছেন। এটি আমাদের ব্যবসা এবং কর্মসংস্থানের (US Trade War) ওপর সরাসরি আক্রমণ। আমরা তাঁকে ছাড় দেব না।”ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং বাণিজ্য যুদ্ধ (Trade War) নিয়ে নেওয়া কঠোর নীতির ফলে কানাডার জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বিশেষত, ট্রাম্পের একাধিক মন্তব্য যেখানে তিনি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য (51st state) হিসেবে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, তা জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ফলে, অনেক কানাডিয়ান নাগরিক তাদের আমেরিকা ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল (Travel Boycott) করছেন। পাশাপাশি, মার্কিন পণ্য বয়কট (Boycott American Products) করারও একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সুপারমার্কেট ও স্থানীয় দোকানগুলোতে অনেকেই আমেরিকান পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকছেন।
নিউজ পোল বাংলা ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:- https://www.facebook.com/share/164mWXbsyp/
কার্নি তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন যে কানাডার প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের আগ্রহ রয়েছে। তিনি বলেন, “আমেরিকানরা আমাদের জল, আমাদের জমি, আমাদের দেশ চায়। তারা যদি সফল হয়, তাহলে আমাদের জীবনযাত্রা ধ্বংস হয়ে যাবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্যসেবা (Healthcare) একটি লাভজনক ব্যবসা হলেও, কানাডায় এটি নাগরিকদের অধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়। কানাডার সার্বভৌমত্ব এবং জনসেবার মডেলকে অক্ষুন্ন রাখার জন্যই এই লড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন কার্নি। মার্ক কার্নি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে যতক্ষণ না মার্কিন প্রশাসন কানাডাকে যথাযথ সম্মান দেয়, ততক্ষণ কানাডা তার প্রতিরোধমূলক শুল্ক বজায় রাখবে। তাঁর কথায়, “আমরা এই লড়াই চাইনি, কিন্তু কানাডিয়ানরা সবসময় প্রস্তুত থাকে। বাণিজ্যে যেমন, হকিতেও যেমন, শেষ পর্যন্ত কানাডাই জিতবে।” কার্নির এই বক্তব্য প্রমাণ করে যে তাঁর প্রশাসন ট্রাম্পের (US Trade War) নীতির বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নেবে এবং কানাডার অর্থনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে। আগামি দিনে কানাডা-আমেরিকা সম্পর্ক (Canada-US Relations) কোন পথে এগোবে, তা এখন সময়ই বলবে।