নিউজ পোল ব্যুরো:বীরভূমের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ফের একবার পুলিশ আধিকারিককে কদর্য ভাষায় হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি একটি অডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে অনুব্রতকে একজন পুলিশ অফিসারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ধর্ষণের হুমকি দিতে শোনা যায়।এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব চাপে পড়ে যায়। দলীয় অস্বস্তি বাড়তেই অনুব্রত মণ্ডল লিখিত ও ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ক্ষমা চান। যদিও তাঁর এই ক্ষমা প্রার্থনা বিতর্ক থামাতে পারেনি। বরং, পুলিশ নিজে থেকেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলার পথে যায় এবং অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একাধিকবার তলব করে। তবে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে তিনি বারবার হাজিরা এড়িয়ে গেছেন, যা পুলিশি তদন্তের গতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে তপ্ত মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar slams TMC)। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক দীর্ঘ পোস্টে লেখেন, “বীরভূমের এক পুলিশ আধিকারিকের মা ও স্ত্রীকে অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণকারী অনুব্রত মণ্ডলের কুকীর্তি এখন প্রকাশ্যে এসেছে। তাই তৃণমূল দল বাধ্য হয়ে নাটকীয়ভাবে শোকজ করেছে। অথচ গোটা তৃণমূলেই এমন হাজারো অনুব্রত রয়েছেন, যাদের ভয়ে পুলিশ প্রশাসন আতঙ্কে থাকে।”
সুকান্ত (Sukanta Majumdar slams TMC) আরও অভিযোগ করেন, “মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সেক্রেটারি প্রকাশ্যে এক থানার আইসিকে হুমকি দিচ্ছেন, চুড়ি পরিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন — যা প্রমাণ করে পুলিশ কীভাবে অপমানিত হচ্ছে।” তিনি এটিকে “জঙ্গলরাজ” বলে আখ্যা দেন এবং বলেন, “এই শাসনব্যবস্থায় পুলিশকে হয় মাথা নিচু করে থাকতে হয়, নয়তো অনুব্রতদের হাতে নিগৃহীত হতে হয়।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বিরোধীরা তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রশাসনের উপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর এবং পুলিশকে দুর্বল করে রাখার অভিযোগ তুলছে। অন্যদিকে শাসক দল এই বিতর্ক থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসার চেষ্টায় রয়েছে। সামগ্রিকভাবে, অনুব্রত কাণ্ড ফের একবার রাজ্যে আইনের শাসন, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা এবং রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।