নিউজ পোল ব্যুরো: ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (International Mother Language Day) উপলক্ষে মাতৃভাষার গুরুত্ব এবং ব্যবহার নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভাষা শুধুমাত্র মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে কিছু মানুষ আছেন যারা নীরবে তাঁদের ভাষার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে যান দৈনন্দিন জীবনের কাজের মাধ্যমে। এমনই একজন ব্যক্তি হলেন পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক ডাঃ অভিজিৎ রায়। তিনি তাঁর পেশাগত জীবনের একটি বিশেষ অংশ মাতৃভাষার প্রতি উৎসর্গ করেছেন।ডাঃ অভিজিৎ রায় ১৯৮৫ সাল থেকে ডাক্তারি পেশার সঙ্গে যুক্ত। শুরু থেকেই তিনি লক্ষ করেছিলেন যে, ইংরেজি ভাষায় লেখা প্রেসক্রিপশন (Prescription) অনেক রোগীর কাছেই দুর্বোধ্য। এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়ে তিনি বাংলা ভাষায় প্রেসক্রিপশন(Bengali Prescription Writing) লেখা শুরু করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত তিনি বাংলা ভাষায় প্রেসক্রিপশন(Bengali Prescription Writing) লেখার অভ্যাস বজায় রেখেছেন।
বর্তমানে অনেক রোগী ডাঃ রায়ের এই উদ্যোগ দেখে অবাক হন। কেউ কেউ তো বিশেষভাবে অনুরোধ করেন, তাঁদের প্রেসক্রিপশন বাংলায় লিখে দিতে। যদিও কিছু রোগী ইংরেজি প্রেসক্রিপশন ছাড়া বোঝেন না, তাঁদের জন্য বাধ্য হয়েই ইংরেজিতে লিখতে হয়। ডাঃ রায় জানান, বাংলা ভাষায় প্রেসক্রিপশন(Bengali Prescription Writing) লিখলে একটি বিশেষ সমস্যা দেখা দেয়, যখন রোগী তা নিয়ে অন্য রাজ্যে যান। সেক্ষেত্রে ওষুধের নাম এবং খাবারের নিয়ম ইংরেজিতে (English) উল্লেখ করতে হয়, যাতে অন্য ভাষাভাষী চিকিৎসক ও ফার্মাসিস্টরা (Pharmacists) বুঝতে পারেন।
জেলার অনেক মানুষই ডাঃ রায়ের এই মাতৃভাষাপ্রীতিতে মুগ্ধ। বাংলা ভাষার প্রতি তাঁর এই অগাধ ভালোবাসা তাঁকে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র করে তুলেছে। ডাঃ রায় মনে করেন, মাতৃভাষার(Bengali Prescription Writing) পাশাপাশি অন্য ভাষা শেখাও গুরুত্বপূর্ণ। তবে নিজের ভাষার কদর করতে শিখতে হবে, তাহলেই ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা করা সম্ভব। ডাঃ অভিজিৎ রায় ভবিষ্যতেও এইভাবে বাংলা ভাষায় প্রেসক্রিপশন লেখা চালিয়ে যেতে চান। তাঁর এই প্রচেষ্টা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও চিকিৎসক মাতৃভাষার(Bengali Prescription Writing) প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবেন বলে অনেকেই প্রত্যাশা করছেন। মাতৃভাষা দিবসে ডাঃ রায়ের এই কর্মকাণ্ড সমাজে এক নতুন ভাবনার জন্ম দিয়েছে। তাঁর মতো আরও অনেকেই মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করলে বাংলা ভাষার মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।