Tea Garden: সরকারি নির্দেশ জারি হতেই পারদ চড়ছে চা বাগানে

রাজ্য

নিউজ পোল ব্যুরো: পুঁজিপতিদের হাতে চা বাগানের জমি (Tea Garden) । সেই সরকারী বিজ্ঞপ্তির(notice) বিরূদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে আদিবাসী সহ অন্যান্য জনগোষ্ঠী। চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমি ভিন্ন কাজে ব্যবহারের নির্দেশিকা জারী হতেই তরাই ডুয়ার্সের আদিবাসী বলয়ে ক্রমশই চড়ছে পারদ। এবার মার্চ মাসে দেওয়া হল জেলা শাসকের দফতর অভিযানের ডাক।

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পাল্টাতে চলেছে তরাই ডুয়ার্সের ইতিহাস সহ পটভূমি। বাম আমলের শেষের দিক থেকেই শিলিগুড়ি নিকটে বর্তমানে ঝা চকচকে উত্তরায়ণ আবাসন প্রকল্প দিয়েই শুরু হয়, চা বাগানের জমি পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া। চাঁদমুনী চা বাগান তুলে দিয়ে হাজার আদিবাসী শ্রমিক তথা ভূমিপুত্র দের বাস্তু হারা করে গড়ে তোলা হয়েছিল এই আবাসন প্রকল্প। সেই শুরু আর আজকের তারিখে বাম সরকারের সেই নীতিকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত রাজ্যে সরকার চা বাগানের ৩০ শতাংশ জমি ভিন্ন কাজে ব্যবহারের অনুমোদন দিতেই অতীতের বাস্তু হারা হবার স্মৃতি উস্কে দিয়েছে তরাই ডুয়ার্সের চা বলয়ে বসবাসকারী আদিবাসী,গোর্খা ,সহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মধ্যে।

আরও পড়ুন: https://thenewspole.com/2025/02/24/shashi-tharoor-has-upset-his-party-by-praising-the-cpms-policies-in-kerala-and-the-states-growth/

এই নিয়েই ক্রমশ চড়ছে উত্তেজনার পারদ। বর্তমান রাজ্যে সরকারের জারী করা বিজ্ঞপ্তির তীব্র বিরোধিতা করে রবিবার এক গুরুত্বপুর্ন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ডুয়ার্সের মাল বাজারের আদিবাসী বিকাশ পরিষদের কার্যালয়ে। এপ্রসঙ্গে তরাই ডুয়ার্স নিতে গঠিত আদিবাসী বিকাশ পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক বাবলু মাঝি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন,
“পূর্বের ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি, চাঁদমুণী চা বাগান শ্রমিকদের বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাস্তু হারা করার মধ্যে দিয়ে। সেই কারণেই বর্তমান রাজ্যে সরকারের চা বাগানের জমি টি ট্যুরিজমের নামে পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেবার চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমরা সংঘবদ্ধ হয়েছি। কারণ এই বর্তমান জমি আমাদের পূর্বপুরুষরা ঘাম ,রক্ত ঝরিয়ে পাহাড় ,জঙ্গল পরিষ্কার করে তৈরি করছেন, এটার ওপর সর্বপ্রথম অধিকার আমাদের ।
আগামী ১১ মার্চ আদিবাসী বিকাশ পরিষদ এই বিষয়ে জেলা শাসক জলপাইগুড়ির জেলা শাসককে অবগত করতে এক শান্তিপূর্ণ অভিযানে কথা ঘোষণা করছে।”

ইতিহাস বলে ১৮৩৭ সালে আসামের চাবুয়া,১৮৫২ সালে দার্জিলিংয়ের পুতাবং,এবং ১৮৭৬ সালে জলপাইগুড়ির গজল ডোবায় ব্রিটিশ সাহেব হিউথন এর হাত ধরে পাহাড় জঙ্গল পরিষ্কার করে তৈরি করা হয়েছিল একের পর এক সবুজ গালিচা বা চা বাগান। দুর্গম পাহাড় আর বন্য প্রাণী ভরা জঙ্গল ভেঙে সাফাই করার জন্য সুদূর ছোটোনাগ পুর মালভূমি অঞ্চল থেকে যাকিনা আজকে ঝাড়খণ্ড ,বিহার, উত্তরাখণ্ড, একপ্রকার ধরে বেঁধে আনা হয়েছিল আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীদের। এরপর পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ১৫০ বছর ,জলপাইগুড়ি শহরে আজও দাড়িয়ে থাকা চা কোম্পানির সদর কার্যালয় গুলোর ইমারতের গায়ে লেখা সন তারিখ প্রমাণ করে সেই ইতিহাসকে।
তবে বর্তমান অত্যাধুনিক সভ্যতার আগ্রাসনের কবলে পরে সেই ইতিহাস যেন পাল্টাতে চলেছে।
এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে।