সরকারি হাসপাতাল ছেড়ে প্রাইভেটে প্র্যাকটিস! রোগীর মৃত্যুতে শো-কজ সাগর দত্তের রেসিডেন্ট চিকিৎসক

অপরাধ জেলা রাজ্য স্বাস্থ্য

নিউজ পোল ব্যুরো, পাণিহাটি: সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। কিন্তু হাসপাতালে রোগীকে পরিষেবা না দিয়ে প্রাইভেটে প্র্যাকটিস। যার জেরে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই অপরাধে সাগর দত্ত হাসপাতালের এক রেসিডেন্ট ডক্টরকে শো-কজ করল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম ডা. শুভম সাব্রেওয়াল। তাঁকে শো-কজ করেছেন কলেজ অফ মেডিসিন সাগর দত্ত হাসপাতালের সাইকিয়াট্রিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. কাবেরী ভট্টাচার্য।

উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে রিম্পা পাল নামে এক নাবালিকা রোগীকে হাসপাতালের সাইকিয়াট্রিক বিভাগের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সিনিয়র রেসিডেন্ট ডা. শুভম সাব্রেওয়ালের অধীনেই সে ভর্তি হয়। ওই মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ডা. অনিকেত দাসের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে ডিউটি থাকলেও প্রাইভেটে প্র্যাকটিস করেন ওই চিকিৎসক। তাঁর দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার কারণেই নাকি মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরীর। এই ঘটনার কথা সামনে আসতেই ডা. শুভম সাব্রেওয়ালকে শো-কজ করেছে কলেজ অফ মেডিসিন সাগর দত্ত হাসপাতালের সাইকিয়াট্রিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. কাবেরী ভট্টাচার্য। সেই শো-কজ চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘ষোলো বছরের রিম্পা পাল গত ৫ নভেম্বর সকাল ১১টা ৪২ মিনিটে সাগর দত্ত হাসপাতালের সাইকিয়াট্রিক বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। ওইদিনই রাত ৮টা ৪৬ মিনিটে সে মারা যায়। নিয়ম অনুযায়ী সে সময় সেখানে উপস্থিত থাকার কথা সিনিয়র রেসিডেন্ট শুভম সাব্রেওয়াল এবং পিজিটি ডা. অহনা ওঝার। কিন্তু আপনারা সেখানে ছিলেন না। এই শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে কেন আপনাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?’

প্রসঙ্গত, রাজ্য স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালে ডিউটিরত পিজিটি সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক কোনওভাবেই বেসরকারি জায়গায় প্র্যাকটিস করতে পারেন না। মঙ্গলবার রীতিমতো প্রমাণ দিয়ে জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশন দেখিয়েছে, কীভাবে ফ্রন্টের নেতা আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ ডা. শুভম সাব্রেওয়াল সরকারি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা না করে দক্ষিণ দমদমে চুটিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন। এমন ঘটনা সামনে আসতেই স্তম্ভিত হয়ে ওঠে আরজি কর কাণ্ডে প্রতিবাদে সামিল হওয়া নাগরিক সমাজ। প্রশ্ন উঠছে, আরজি করের ঘটনাকে সামনে রেখে তাহলে কারা মানবদরদী সাজছিলেন? সেদিনের দ্রোহের মিছিলে অংশ নেওয়া অনেকেই বলছেন, ‘ভুল লোকেদের পাশে হেঁটেছিলাম। আজ বুঝতে পারছি।’