নিউজ পোল ব্যুরো: ওয়াকফ (Waqf) বিতর্কে উত্তাল গোটা বাংলা। কার্যত আগুন জ্বলছে মুর্শিদাবাদ এবং মালদায়। এই পরিস্থিতিতে বুধবার আরও একবার রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে তুলোধুনা করলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপির (BJP Bengal) প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর স্পষ্ট দাবি, যা কিছু হচ্ছে সবটাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ইচ্ছায় এবং উৎসাহেই হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ Dilip Ghosh : “মমতার সম্প্রীতির খেসারত দিতে দিতে…”, নববর্ষের সকালে এ কী বললেন দিলীপ!
রোজকার মত এদিন সকালেও নিউটাউনের ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে আসেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। প্রাতঃভ্রমণ শেষে তাঁকে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে মমতার বৈঠক প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বলেন, “পিঠ চাপড়ে সাবাশি দেওয়ার জন্য বৈঠকে ডেকেছেন। যা কিছু হচ্ছে মমতার ইচ্ছায় এবং উৎসাহে হচ্ছে। উনি ঈদের দিন বার্তা দিয়ে দিয়েছিলেন। যা খুশি করো আমি দেখে নেব। মালদহ জেলার পল্লালপুরে স্কুলে এতগুলো লোক আশ্রয় নিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও লোক তাদের কথা শুনতে গিয়েছেন?” এরই সঙ্গে যোগ করেছেন, “একই রাজ্যের একটি জায়গা থেকে লোক পালিয়ে আরেকটি জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। আর মমতা মুসলিমদের ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য ডেকেছেন। শরবত খাওয়ানো হবে। উনি বলবেন ঠিক আছে। চালিয়ে যাও। ওরা আগেই ঘোষণা করেছে ওরা ৪০ দিন ধরে চালিয়ে যাবে। জানি না, মমতার যদি এটাই ইচ্ছা হয় তাহলে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের ভাবতে হবে তারা কীভাবে বাঁচবে?”

এতেই শেষ নয়। একইসঙ্গে এই হিংসাত্মক পরিস্থিতির নেপথ্যে বিদেশি শক্তির মদতও দেখতে পাচ্ছেন বিজেপি নেতা। তাঁর কথায়, “আমরা বারবার বলছি বাংলাদেশে যা ঘটেছে এখানে তার ট্রেলার চলছে। একই টাইপের। হিন্দু বসতি এলাকা ঘিরে নিয়ে অত্যাচার চলেছে। অবিকল বাংলাদেশ মডেল। এক্সটেন্ডেড বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছে এটা। মমতার পুলিশ চুপচাপ দেখছে অথবা আগেই পালিয়ে গিয়েছে। আমাদের কাছে বারবার হিন্দুদের ফোন এসেছে। বলা হয়েছে বিএসএফ পাঠান। ভোর থেকে শুরু হয়েছিল। সকালে যখন বিএসএফ ঢোকে ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। পুলিশ দর্শক হিসেবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে। আমার মনে হয় এটাই ওদের স্ট্র্যাটেজি। হিন্দুদের ভয় দেখিয়ে এলাকা খালি করে দাও যাতে আগামী দিনে কোনো হিন্দু ভোট না দিতে পারে।”
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব চ্যানেলের লিংক: https://youtube.com/@newspolebangla?si=Ygy6shQubNhWstbr
এদিন জগন্নাথ কালচারাল সেন্টার প্রসঙ্গেও মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তিনি বলেন, উনি তো জগন্নাথ মন্দির তৈরি করেছেন। ওটা লিজ দিয়ে দিন। কিছু টাকাপয়সা ঘরে আসবে। সবই ওনার রাজনীতির হিসেব। ওটা হয়ত এরপর মমতা মন্দির নাম হবে। যেমন বিড়লা মন্দির আছে। ওখানে ওনারই একটা মূর্তি বসিয়ে দিন। ওনারই পুজো হোক।” অন্যদিকে ধুলিয়ানের ভাইরাল সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে দিলীপের দাবি, “হঠাৎ করে হাজার হাজার লোক আসতে পারে না। পুলিশের কাছে খবর ছিল না? আসলে কেউ জানতে চায় না। মুখ্যমন্ত্রী চোখ দেখে মাওবাদী চিনতে পারেন, পার্টির মধ্যে কে খাচ্ছে ঘুমাচ্ছে জানতে পারেন। আর রাজ্যে এত বড় ঘটনার খবর নেই? সব খবর আছে। সব জেনে উনি করাচ্ছেন। তারপর বাহবা দেওয়ার জন্য নেতাদের আজ ডেকেছেন। এই ধরনের ঘটনা আগেও হয়েছে পরেও হবে।”
বাংলায় চাই যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) মত কাউকে। এমনই মন্তব্য করেছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা (Sadhvi Pragya)। সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বক্তব্য, “মানুষ নিরুপায় হয়ে এরকম অনেক কিছু বলে। আমরা স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে বাস করি। দেশে একটা সংবিধান আছে। সেটা কেউ মানে। কেউ মানে না। যা পরিবর্তন হবে সেটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় করতে হবে। যোগী আদিত্যনাথ আকাশ থেকে পড়েননি। উত্তর প্রদেশের মানুষের মনে হয়েছে শক্ত প্রশাসক দরকার। ওখানে একসময় যারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল তারা এখন এনকাউন্টারের শিকার। বাংলার সমাজ এখন বুঝতে পেরেছে। প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে ঠিক করতে হবে এটা বাংলাদেশের মত হবে নাকি ভারতের সংবিধান অনুযায়ী চলবে। নেতা লড়াই করতে করতে উঠে আসবে। মানুষ নেতা ঠিক করবে।”