নিউজ পোল ব্যুরো:গরম আর শহরের ব্যস্ত জীবনে মনটা যখন ক্লান্ত, তখন এক টুকরো শান্তি আর সবুজের খোঁজে মনটা উচাটন হয়ে ওঠে। আর বর্ষার ছোঁয়া পেলে পাহাড়ের রূপ যে কতখানি মোহময়ী হতে পারে, তার সাক্ষী থাকতে চাইলে আপনার এবারের ছুটির ঠিকানা হতেই পারে কালিম্পং (Kalimpong travel in monsoon)। নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) থেকে মাত্র আড়াই-তিন ঘণ্টার এই পাহাড়ি পথ আপনাকে নিয়ে যাবে এক স্বপ্নের রাজ্যে, যেখানে মেঘেরা আপনার সঙ্গী হবে।
আরও পড়ুন:https://thenewspole.com/2025/06/08/preity-zinta-mother-34-daughters-before-marriage/
কেন বর্ষায় কালিম্পং?
অনেকেই বর্ষায় পাহাড় ভ্রমণের কথা শুনলে পিছিয়ে যান। কিন্তু কালিম্পং-এর আসল সৌন্দর্য ধরা দেয় এই সময়ে। বৃষ্টির পর চারপাশের সবুজ আরও ঘন হয়ে ওঠে। পাইন গাছের জঙ্গল থেকে ভেসে আসে ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ। মেঘ আর কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকা রাস্তা দিয়ে গাড়ি বা পায়ে হেঁটে চলার অনুভূতিই অন্যরকম। এই সময়ে পর্যটকদের ভিড় তুলনামূলকভাবে কম থাকায়, নিরিবিলিতে ছুটি কাটানোর জন্য এটি এক কথায় আদর্শ।
কী কী দেখবেন?
কালিম্পং এবং তার আশেপাশে ঘোরার জায়গার অভাব নেই। আপনার ভ্রমণকে সার্থক করতে যে জায়গাগুলো অবশ্যই তালিকায় রাখবেন:
ডেলো পাহাড় (Deolo Hill): কালিম্পং-এর সর্বোচ্চ স্থান এটি। এখান থেকে একদিকে যেমন পুরো কালিম্পং শহর ও তিস্তা নদীর মনোরম দৃশ্য দেখা যায়, তেমনই পরিষ্কার আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়াও উঁকি দেয়। ডেলোতে সুন্দর পার্ক এবং অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস হিসেবে প্যারাগ্লাইডিং-এর ব্যবস্থাও রয়েছে।
ডক্টর গ্রাহাম’স হোমস (Dr. Graham’s Homes): ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের এক বিশাল নিদর্শন এই স্কুল চত্বর। शांत ও সুন্দর পরিবেশে কিছুটা সময় কাটাতে চাইলে এখানে যেতেই পারেন।
পাইন ভিউ নার্সারি (Pine View Nursery): ক্যাকটাসের এক অবিশ্বাস্য সংগ্রহ রয়েছে এই নার্সারিতে। দেশ-বিদেশের নানা প্রজাতির ক্যাকটাস দেখতে দেখতে সময় কেটে যাবে।
মর্গ্যান হাউস (Morgan House): ব্রিটিশ আমলের এই বাড়িটি এখন একটি ট্যুরিস্ট লজ। এর ঐতিহাসিক স্থাপত্য এবং ভূতের গল্পের জন্য এটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
জাং ঢোক পালরি ফোদং বৌদ্ধমঠ (Zang Dhok Palri Phodang Monastery): ডেলো পাহাড়ের কাছে অবস্থিত এই বৌদ্ধমঠে রয়েছে শান্ত ও আধ্যাত্মিক পরিবেশ। এখানকার প্রার্থনা চক্র ও মূর্তিগুলো আপনার মনে শান্তি এনে দেবে।
কাছাকাছি ঘোরার ঠিকানা:
হাতে যদি আরও কিছুটা সময় থাকে, তাহলে কালিম্পং (Kalimpong travel in monsoon) থেকে ঘুরে আসতে পারেন লাভা, লোলেগাঁও এবং রিশপ।
লাভা (Lava): মেঘে ঢাকা এক ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। এখানকার বৌদ্ধমঠ ও শান্ত পরিবেশ আপনাকে মুগ্ধ করবে।
লোলেগাঁও (Lolegaon): এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো ক্যানোপি ওয়াক বা ঝুলন্ত সেতু। ঘন জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে এই পথে হাঁটার অভিজ্ঞতা ভোলার নয়।
কীভাবে যাবেন?
ট্রেনে: নিকটতম স্টেশন হলো নিউ জলপাইগুড়ি (NJP)। সেখান থেকে গাড়ি বা শেয়ারড জিপে করে সহজেই কালিম্পং পৌঁছানো যায়। সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা।
বিমানে: নিকটতম বিমানবন্দর হলো বাগডোগরা (IXB)। বিমানবন্দর থেকে গাড়ি ভাড়া করে কালিম্পং যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন ও কী খাবেন?
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক:https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT
কালিম্পং-এ সব ধরনের বাজেটের হোটেল, রিসর্ট ও হোম-স্টে পাওয়া যায়। নিজের পছন্দ অনুযায়ী একটি বেছে নিতে পারেন। আর পাহাড়ে এসে স্থানীয় খাবারের স্বাদ না নিলে ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এখানকার ধোঁয়া ওঠা মোমো, থুকপা, নুডলস এবং স্থানীয় চিজ অবশ্যই চেখে দেখবেন।
সুতরাং, এই বর্ষায় ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ুন মেঘেদের রাজ্য কালিম্পং-এর উদ্দেশ্যে। শহরের ক্লান্তি ধুয়ে ফেলে পাহাড়ের কোলে কয়েকটা দিন আপনাকে নতুন করে প্রাণশক্তিতে ভরিয়ে তুলবে, এ কথা নিশ্চিত।