নিউজ পোল ব্যুরো: বিমান দুর্ঘটনা, প্রযুক্তিগত ত্রুটি, মাঝপথে ফিরে আসা উড়ান! সব মিলিয়ে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়া (Air India)। একদিকে বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন, অন্যদিকে বুকিংয়ে মারাত্মক পতন। বিগত ছয় দিনে এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) যাত্রী সংখ্যা কমেছে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। শুধু গত ৪৮ ঘণ্টাতেই বোয়িং ৭৮৭-৮ মডেলের অন্তত ৯টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট (International Flight) বাতিল করতে হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বোয়িং (Boeing) বিমানের নিরাপত্তা পরীক্ষার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের আকাশপথ বন্ধ থাকা, রাত্রিকালীন বিধিনিষেধ ও বিমানের সীমিত সংখ্যাই এই সংকট আরও ঘনীভূত করছে।
আরও পড়ুন: India Quantum Communication: ডিআরডিও-আইআইটির কারিশমা! গোপন তথ্য থাকবে ১০০% নিরাপদ
পাখির ধাক্কা, যাত্রীদের সঙ্গে বচসা যেন থামছেই না!
শুক্রবারও পুণে (Pune) থেকে দিল্লিগামী (Delhi) এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) একটি ফ্লাইট পাখির ধাক্কায় বাতিল হয়। যদিও বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করে, তবে সম্ভাব্য ক্ষতির আশঙ্কায় সেটিকে আর রওনা দেওয়া হয়নি। কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের সুরক্ষাই তাদের প্রথম অগ্রাধিকার। তাই ঝুঁকি না নিয়ে বিমানটিকে স্থগিত রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের জন্য দেওয়া হয়েছে পুরো রিফান্ড (Refund) অথবা বিনামূল্যে পুনরায় বুকিংয়ের সুবিধা।
আহমেদাবাদ দুর্ঘটনার (Ahmedabad Plane Crash) তদন্তে ধোঁয়াশা, ব্ল্যাক বক্স (Black Box) পাঠানো হচ্ছে আমেরিকায় (America)
১২ জুন আহমেদাবাদের ভয়াবহ দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দুর্ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহ ও উদ্ধারকাজ শেষ হলেও, বিমানের ব্ল্যাক বক্সের (Black Box ) অবস্থা এতটাই খারাপ যে প্রয়োজনীয় ডেটা উদ্ধার করা যাচ্ছে না। এখন সেটিকে পাঠানো হবে ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডে। সঙ্গে থাকবেন ভারতীয় আধিকারিকরাও। ব্ল্যাক বক্সে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস থাকে, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার। কিন্তু যেহেতু দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত, তাই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ নির্ধারণ আপাতত কঠিন বলেই জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
ফ্লাইট বাতিল, যাত্রী ক্ষোভ আর সংসদীয় প্রশ্নের মুখে মন্ত্রক
ডিজিসিএ (DGCA) জানিয়েছে, আহমেদাবাদ দুর্ঘটনার পর ৬৬টি ড্রিমলাইনার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ৩৩টি ড্রিমলাইনার বিমানের মধ্যে ২৪টি ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, বাকি বিমান এখনও পরিষেবায় ফিরতে পারেনি। ২০ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত আন্তর্জাতিক রুটে ১৫ শতাংশ ফ্লাইট কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। তিনটি রুট সাময়িকভাবে বন্ধও রাখা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংসদীয় কমিটি। প্রতি বছর ৩৫ কোটি টাকার বাজেট থাকলেও, তা কোন খাতে কতটা ব্যয় হচ্ছে, তার স্বচ্ছ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
উত্তরাধিকার ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা তাদের ‘মহারাজা ক্লাব’ সদস্যদের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছে এবং যাত্রী সুরক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখছে। ইউরোপ ও আমেরিকার রুটে রুট পরিবর্তন, অপারেশনাল খরচ বৃদ্ধি ও আকাশপথ বন্ধ থাকায় ভাড়া আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এর ফলে যাত্রীরা বিকল্প পূর্ব রুটের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হতে পারেন। এখন অপেক্ষা শুধুই ব্ল্যাক বক্সের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণের। সেটি না পাওয়া পর্যন্ত দুর্ঘটনার আসল কারণ অন্ধকারেই ঢাকা থাকবে। আর ততদিন এয়ার ইন্ডিয়ার ওপর যাত্রীদের আস্থা কতটা টিকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক:- https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT