মৃনাল কান্তি সরকার, শান্তিনিকেতন : ১৯০১ সালে যে বিদ্যালয়ের সূচনা করেছিলেন স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তখন তিনি নাম দিয়েছিলেন ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয়। ধীরে ধীরে গুটিগুটি পায়ে সে বিদ্যালয় বড় হয়েছে, ব্রহ্মচর্য আশ্রম বদলে নাম হয়েছে পাঠভবন। তারপর কেটে গিয়েছে ১২৩ বছর। সেই ১২৩ বছরের প্রাক্কালে আবারও অনুষ্ঠিত হলো পুনর্মিলন উৎসব। যে উৎসব গুরুদেব চেয়েছিলেন একে অপরের সঙ্গে গড়ে উঠুক নতুন এক মিলনক্ষেত্র। যে মিলনক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে তৈরি হবে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শনিবার একুশে ডিসেম্বর প্রতিদিনের মতোই বৈতালিকের মধ্যে দিয়েই শুরু হল এই পুনর্মিলন উৎসব। তারপর একে একে ধীরে ধীরে যা একে অপরের সঙ্গে ভাব বিনিময়ে গড়ে উঠতে শুরু করলো এক নতুন অধ্যায়।
স্বাধীনতার পর যারা এখান থেকে পড়ে পাশ করে গিয়েছেন তারাও এসেছেন এদিনের পুনর্মিলন উৎসবে। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই স্মৃতির পাতায় আজ সবই তাদের কাছে নতুন বলেই মনে হচ্ছে কিন্তু তবুও কোথাও যেন ইতিহাস তাদেরকে বারবার ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেই অতীতের কাছে। একদিকে আপামর মানুষ অন্যদিকে গুরুদেবের আশ্রম কিন্তু কেউই গুরুদেবের শেখানো সেই বার্তা কে ভুলে গিয়ে আজও কোন কিছু করতে অরাজি থেকে গেছেন। যে জিনিস খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কখনও কোনদিন চাননি বর্তমানে সেই সব কিছুই এখন ধরা পড়ে তার সৃষ্টি করা এই আশ্রমে। হয়তো তিনি কখনোই চাননি কোন কিছুকে জীবন তৈরীর মুহূর্তে বেড়াজালের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখতে।
আজ এখান থেকে বিলোপ পেয়েছে অনেক কিছুই থেকে গেছে শুধু সেদিনের এই গাছ বাঁধা পাখি আর সেই চেনা মাটি আর তার সোঁদা গন্ধ। প্রকৃতির মাঝে যে মানুষ তৈরীর কারখানা সে আজও দিনরাত এক করেই ছুটে চলে সেদিনের মতোই। সে শুধু স্বপ্ন দেখে আজ যারা পুনর্মিলন উৎসবে এসে উপস্থিত হয়েছে যেন আগামী দিনেও সবাই তার কাছেই এসে উপস্থিত হয় এবং এই মায়ায় জড়ানো বেড়াজালে আবার যেন ফিরে আসে তারা শান্তিনিকেতনের টানে।