নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতাঃ গতকাল বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে রাজ্যের একাধিক বিষয় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের বৈঠকে প্রথমে উপস্থিত ছিলেন না রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমার এই বিষয়টি নিয়েও তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়াও রাজ্যের একাধিক বিষয়কে তুলে ধরে বেজায় মেজাজ হারান মুখ্যমন্ত্রী। এবার আজ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় প্রবেশের আগে মুখ্যমন্ত্রীর কথার রেশ ধরে তাঁকে কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সুশান্ত ঘোষ, সুদর্শনার ওপর হামলার প্রসঙ্গ তুলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিরোধী দলনেতা। তবে বারাবুলের আইসিকে সাসপেন্ড করার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একমত তিনি।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন পুলিশের একাংশ শুধু নয়, ‘তৃণমূলের একাংশ জড়িত রয়েছে। যারা নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মাধ্যমে দক্ষিণ কলকাতায় পুলিশী পাহারায় টাকা পাঠান’। অর্থাৎ অভিযোগের তীর শুধু পুলিশের বিরুদ্ধে নয় গোটা রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধেই তা বুঝতে বাকি থাকে না।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনার যদি সত্যিই সংস্কারে সদিচ্ছা থাকে, আপনি বিরোধী দলনেতাকে একদিন ডাকুন, বসে আপনার কাছে সব হিসাব দিয়ে আসবো। সাহস থাকলে অজিত সিংকে দল থেকে সাসপেন্ড করুন।’
ট্যাব জালিয়াতি নিয়েও মুখ খোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, ‘কোন গ্যাং জড়িত হলে তারা রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলে অবশ্যই তারা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করছেন।’
শুধু এই ক’টি বিষয় নয় এদিন গোটা তৃণমূলকে ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে তুলোধোনা করেন তিনি। বলেন, ‘বৈধভাবে অবৈধ বিভিন্ন কোম্পানি থেকে আপনি যে টাকা নিয়েছেন, তার জেরেই এইসব পাচার। পুলিশের একাংশ জড়িত অবশ্যই। কিন্তু শুধু তারা এরকম নয়। পুর এলাকার ভোটাররা আগে কংগ্রেসকে ভোট দিতেন, তৃণমূল তৈরির পর তৃণমূলকে ভোট দিতেন। ২০২৪ এ প্রথম ৭৫ ভাগ পুরসভা এলাকায় তৃণমূল হেরেছে। তাই উনি মাঝে মধ্যে এই ধরনের বার্তা দিয়ে দিচ্ছেন।’
অপরদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার বাজারে আলুর চড়া দাম নিয়ে মেজাজ হারিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘আলু কেন বাইরে চলে যাচ্ছে`?’ মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় এদিন মূলত ছিলেন পুলিশ। এই প্রসঙ্গেও পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীকেই কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। আলু রফতানিতে মুখ্যমন্ত্রীর রাশ! শুভেন্দুর কথায়, ‘পশ্চিম মেদিনীপুরের হিমঘরে যে আলু মজুত রয়েছে ওটা না বলতে পারলেও, হুগলি বা বর্ধমানের হিমঘরে যে আলু মজুত রয়েছে। ওই বিষয়ে ওখানকার তৃণমূল নেতারা ভালো বলতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রী ওদের সঙ্গে কথা বলা উচিৎ।’ এদিন উপনির্বাচনের ফল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমার যা বলার আগে বলে দিয়েছি। যেখানে যেখানে মানুষ ভোট দিতে পেরেছে এনডিএ ও বিজেপির ওপর তারা আস্থা রাখবে। মহারাষ্ট্র ঝাড়খন্ড উত্তরপ্রদেশে। সেখানে কয়েক লক্ষ করে বাঙালি ভোটার রয়েছেন, তাঁরা বিজেপিতে আগের মতোই আস্থা রাখবেন।’