নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: এসএসকেএমে চরম উত্তেজনা, দীর্ঘক্ষণ বিনা চিকিৎসায় ট্রলিতে রোগী, বিক্ষোভে ফেটে পড়লো সাধারণ মানুষ। ফের এসএসকেএমে চরম রোগী ভোগান্তির অভিযোগ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড। রাতে ঘটে দুর্ঘটনা এদিকে সকাল পেরাতেও বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হল রোগীকে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতেই গরুতর জখম হন ফুড ডেলিভারি সংস্থায় কর্মরত এক যুবক। তড়িঘড়ি তাকে দুর্ঘটনার স্থল থেকে তুলে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু গরিবের সংসারে টাকা কোথায়! অকথ্যা সেখান থেকে নিয়ে যেতে হয় সরকারি এসএসকেএম হাসপাতালে। তবে সেখানেও ঠাই হলো না অসহায়ের। সেখানে গিয়েও চরম হেনস্থা গোটা রাত সহ্য করতে হলো যন্ত্রনা।
রাতে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ডেলিভারি বয়, পায়ে গুরুতর আঘাত পান তিনি। এরপর রাতে চিকিৎসকদের তরফ থেকে জানানো হয় অবিলম্বে পা কেটে বাধ দেওয়ার কথা, এরপরেই ভোগান্তি। সরকারি জায়গা থেকেই পরিবারের দাবি অন্যত্র স্থানান্তরিত করার কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু নেওয়া হয়নি খোঁজ। এরপর আরও দুটি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে অবশেষে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজি কর হাসপাতালে। সেখানেও চিকিৎসকরা পা কেটে বাদ দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু সেই খরচ পরিবার কিছুতেই দিতে পারবেন না বুঝেই আবার অন্যত্র রওনা। খরচ সাধ্যের বাইরে হওয়ায় ডেলিভারি বয় অবিনাশ কে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে।
ভোর চারটে নাগাদ তাঁকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য যাওয়া হয় এসএসকেএমে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর কয়েক ঘন্টার ট্রলিতে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। অস্ত্রপ্রচার তো দূর এক ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কোনও ইমারজেন্সি বেডের ব্যবস্থা করা যায়নি। পরিবারের তরফ থেকে চরম ভোগান্তির অভিযোগ আনা হয় হাসপাতালে বিরুদ্ধে। ভোরে নিয়ে আসার পর দীর্ঘ সময় ফেলে রাখা হয় রোগীকে অনবরত হয় রক্তক্ষরণ। চিকিৎসা হলে হয়তো পা বাঁচানো যেতে বলেই মনে করেছেন রোগীর মা। ছেলেকে সঠিক সময় চিকিৎসা না করানোর জন্য সরাসরি হাসপাতালের গাফিলতিতে দায়ী করেছেন আহত ডেলিভারি বয়-এর মা।
সম্প্রতি আরজিকর কাণ্ডের পর যেখানে সাধারন মানুষের ও ডাক্তারদের নিরাপত্তার জন্য সরকারের তরফ থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকেও বারংবার সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো উন্নত করার কথা বলা হয়। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে কলকাতার অন্যতম হাসপাতাল এসএসকেএমে কেন এমন চরম রোগী ভোগান্তি? তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। তবে কি শুধু এসএসকেএম নয় সর্বত্রই সরকারকে অমান্য করেই বজায় রয়েছে গাফিলতি। এ বিষয়ে অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।