ক্যান্সারে আক্রান্ত সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন

আন্তর্জাতিক বিনোদন

নিউজ পোল ব্যুরো : বাংলাদেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন দীর্ঘদিন ওরাল ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ২০২৩ সালের পর থেকে তাঁকে আর মঞ্চে গান গাইতে দেখা যায়নি। সম্প্রতি তিনি জানান, ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরে তাঁর অস্ত্রোপচার হয় এবং এরপর চার মাস ধরে ৩০টি রেডিওথেরাপি নেন। এই খবর জানত কেবলমাত্র তাঁর কাছের মানুষেরা। সাবিনা ইয়াসমীন বলেন, ‘এটি ছিল আমার কাছে এক কঠিন যুদ্ধ, তবে আমি মনোবল হারায়নি।’ চিকিৎসা শেষে তিনি গত মাসে ঢাকায় ফেরেন। নিয়মিত ফলোআপের জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে যেতে হয়েছিল, তবে আপাতত আর যাওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে সাবিনা ইয়াসমীন বলেন, ‘শেষ চার মাস খুব কঠিন সময় ছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত ও দেশবাসীর দোয়ায় আমি সুস্থ হয়ে উঠেছি। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার পুরো সময় সংগীতশিল্পী মিলিয়া সাবেদের বাড়িতে থেকেছি। তিনি আমার জন্য যা করেছেন, তার ঋণ শোধ করতে পারব না।’

দীর্ঘ বিরতির পর আগামী ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় দুটি বড় অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার কথা রয়েছে সাবিনা ইয়াসমীনের। এরপর চট্টগ্রামেও স্টেজ শো করবেন তিনি। প্রথম অনুষ্ঠানে নিজের পছন্দের গানের পাশাপাশি শ্রোতাদের অনুরোধের গানও পরিবেশন করবেন। গানে ফিরে আসার অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আবার গান গাইতে পারব। গান ছাড়া আমি কিছু ভাবতে পারি না। গানেই আমার আনন্দ।’ স্টেজ শোর প্রস্তুতির জন্য টানা তিন দিন যন্ত্রশিল্পীদের নিয়ে মহড়ায় অংশ নেবেন তিনি। প্রসঙ্গত, সাবিনা ইয়াসমীন ১৯৬৭ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ সিনেমায় প্রথম গান করেন। সর্বশেষ ২০২০ সালে কবরী পরিচালিত ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবিতে কণ্ঠ দেন এবং সিনেমাটির চারটি গানের সুর করেন। এটি ছিল তাঁর একমাত্র সংগীত পরিচালনা।

১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া এই কিংবদন্তি শিল্পী চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি দেশাত্মবোধক, উচ্চাঙ্গ, ধ্রুপদী, লোকসংগীত ও আধুনিক বাংলা গানে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। ৮০-র দশকে তিনি প্রথম বিয়ে করেন নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুকে। পরে তাঁর বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি কলকাতার সংগীতশিল্পী সুমন চট্টোপাধ্যায়ের (বর্তমানে কবির সুমন) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে এই সম্পর্কও বিচ্ছেদে গড়ায়। সাবিনা ইয়াসমীন বাংলা গানের জগতে অনন্য অবদান রেখে গেছেন। নতুন করে গানে ফিরতে পেরে তিনি উচ্ছ্বসিত এবং আগামীতেও সংগীতচর্চা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।