নিউজ পোল ব্যুরো: নদিয়ার মাজদিয়ার আমবাগানের চাষের জমিতে চারটি বিশাল আকারের বাঙ্কার উদ্ধার হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শুক্রবার দুপুর থেকে প্রায় ২৫ ঘণ্টা ধরে বিএসএফ ও পুলিশের যৌথ অভিযানে এই বাঙ্কারগুলি আবিষ্কৃত হয়। ঘটনাস্থল থেকে ৬২,২০০ বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ (ফেনসিডিল) উদ্ধার করা হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ সামগ্রী বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে মজুত করা হয়েছিল বলে বিএসএফের প্রাথমিক অনুমান।
উদ্ধার হওয়া বাঙ্কারগুলি নদিয়ার মাজদিয়া এলাকা থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টুঙ্গি চেকপোস্টের নিকটবর্তী। দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকা বাংলাদেশে ফেনসিডিল এবং সোনা চোরাচালানের জন্য কুখ্যাত। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রশাসনিক কড়াকড়ি ও সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর কারণে এই বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল বাঙ্কারে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। উদ্ধারকৃত বাঙ্কারগুলি পুরোটাই লোহার তৈরি। প্রতিটি বাঙ্কারের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ ফুট এবং প্রস্থ ২০ ফুট। ভূগর্ভস্থ এই স্টোরেজ ট্যাঙ্কগুলি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে তা সহজে নজরে পড়বে না। তবে এত বড় পরিকাঠামো কীভাবে তৈরি হল, কে বা কারা এতে যুক্ত, তা এখনও রহস্যময়।
সেই জমির মালিক কে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। স্থানীয় বাসিন্দারা এই বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নন। সীমান্তের এত কাছের একটি এলাকায় এ ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ কীভাবে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রশাসনের নজর এড়ালো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বাঙ্কার থেকে উদ্ধার হওয়া ফেনসিডিলের বোতলগুলি সিল করে রাখা হয়েছে। রবিবার সকালে বিএসএফ ও এনসিবির বিশেষ দল বাঙ্কারগুলির মাপজোক করে তদন্ত চালায়। সূত্রের খবর, এই অভিযানের ফলে চোরাচালানের একটা বিশাল নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তবে, এই চক্রের মূল হোতা কে এবং এই বাঙ্কারগুলি নির্মাণের পেছনে কে বা কারা রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এলাকাটি কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে রাখা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এত বড় পরিমাণ ফেনসিডিল মজুত এবং বাঙ্কার তৈরির বিষয়টি সকলকেই অবাক করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই চক্রের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।