Mohun Bagan: বসন্তের রঙ সবুজ মেরুন

ক্রীড়া ফুটবল

নিউজ পোল ব্যুরো: আমরা ভারত সেরা। আমরা মোহনবাগান (Mohun Bagan)। সপ্তাহান্তের যুবভারতী (VYBK) মাতল এই সুরে। এই শ্লোগানে। সবুজ মেরুন আবিরে ঢাকল আকাশ, ঢাকল বাতাস। ব্যাকড্রপে তখন বাজছে ‘আমাদের সূর্য মেরুন, নাড়ির যোগ সবুজ ঘাসে!’ যতদূর চোখ যায় উত্তাল সবুজ মেরুন জনতা, নানান টিফো আর ‘জয় মোহনবাগান’ (Joy Mohunbagan) এই একটাই শব্দব্রহ্ম। লিগ শিল্ড (ISL League Shield) জয় আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। সুপার সিক্সের (ISL Super Six) টিকিট‌ও কনফার্ম। বাকি ছিল শুধু লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে গোয়াকে (FC Goa) হারিয়ে ঘরের মাঠে ভারত সেরার মুকুট মাথায় তোলা। শনিবার সেটাই করল মোহনবাগান। আর ভরা যুবভারতী মেতে উঠল বসন্তের উৎসবে। বসন্ত মানেই রঙের উৎসব। যে রঙ শুধুই সবুজ মেরুন।

আরও পড়ুন: Mohun Bagan: আমাদের খুঁজলে পাবে, সোনায় লেখা ইতিহাসে

আগেই ওড়িশা এফসিকে (Odisha FC? হারিয়ে ইতিহাস গড়েছিল কোচ হোসে মোলিনার (Jose Molina) ছেলেরা। আইএস‌এলের খাতায় পরপর দুই মরশুম লিগ-শিল্ড জেতার রেকর্ড যে আর কোন ক্লাবের নেই। এক‌ইসঙ্গে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে ৫০ পয়েন্টের গন্ডি টপকেছিল মেরিনার্সরা (Mariners)। কিন্তু সেদিন লিগ-শিল্ড হাতে আসেনি। তাই বাগান (Mohun Bagan) ফুটবলারদের থেকে আপামর সবুজ মেরুন ভক্তদের নজর ছিল শনিবারের গোয়া ম্যাচের দিকে। যত‌ই নিয়মরক্ষার ম্যাচ হোক গোয়াকে হারিয়ে খেতাব হাতে নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন দিমি, কামিংস থেকে শুভাশিষরা। অবশেষে এল সেই স্বপ্নপূরণের রাত।

এদিন শুরু থেকেই যেমন ছিল বাইপাসের ধার থেকে যুবভারতীর পরিবেশ তার‌ই প্রতিফলন ছিল যেন মোহনবাগানের (Mohun Bagan) খেলার মধ্যে‌ও। দিমি-স্টুয়ার্ট-মনবীরের আক্রমণ বারবার আছড়ে পড়ছিল গোয়ার রক্ষণে। ২৫ মিনিটে লিস্টন কোলাসোর কাছে সূবর্ণ সুযোগ এসেছিল গোলের কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। প্রথমার্ধের শেষ দিকে এসে মনবীর গোল করলেও গোয়া খেলোয়াড়দের আপত্তিতে তা বাতিল করে দেন রেফারি। দিমির উদ্দেশ্যে বল বাড়িয়েছিলেন মনবীর। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ সামলাতে না পেরে পড়ে যান তিনি। সেই বল মনবীর জালে জড়ালে গোয়া হ্যান্ডবল হয়েছে বলে অভিযোগ করে। রিপ্লেতে দেখা যায় যে পেত্রাতোসের হাতে বল লেগেছে। তাই মনবীরের গোল বাতিল হয়ে যায়। ফলে প্রথমার্ধের খেলা ০-০ থাকে।

নিউজ পোল বাংলা ফেসবুক পেজের লিংক: https://www.facebook.com/share/1EA79Afcw5/

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও গোয়া রক্ষণ ভেদ করতে পারেনি মোহনবাগান (Mohun Bagan)। কিন্তু ৬২ মিনিটে লিস্টন কোলাসোর উদ্দেশ্যে টম অ্যালড্রেডের ভাসানো বল গোয়া ডিফেন্ডার বরিস সিং হেড করে গোলরক্ষক ঋত্বিক তিওয়ারির কাছে পাঠাতে চাইলে ভুলবশত নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে ফেলেন বরিস। পালতোলা নৌকা এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। আত্মঘাতী গোলের পরেই ম্যাচ থেকে হারিয়ে যেতে থাকে মানোলো মার্কেজের ছেলেরা। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে সংযুক্তি সময়ে (৯০+৪ মিনিট) কফিনে শেষ পেরেক পোতেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন বাগান জনতা থেকে ফুটবলাররা।

এদিন আর‌ও একটি রেকর্ড গড়েছে মোহনবাগান (Mohun Bagan)। ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে একমাত্র ক্লাব হিসাবে ১০০০ পয়েন্ট পাবার কীর্তি গড়েছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। সেই ১৯৯৬ সালের জাতীয় লিগ থেকে আইলিগ হয়ে আজকের আই‌এস‌এল সবমিলিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে ভারতীয় ফুটবল লিগে ১০০০ পয়েন্ট অর্জন করেছে সবুজ মেরুন শিবির। যা ভারত তো বটেই বিশ্ব ফুটবলেও নজির। এই মুহূর্তে মোহনবাগানের ধারেকাছে আর কোন ক্লাব নেই। মোহনবাগানকে হারাতে পারে একমাত্র মোহনবাগান‌ই। এবার লক্ষ্য শুধু একটাই আই‌এস‌এল কাপটা ঘরে তোলা। ততক্ষণ বাজতে থাকুক ‘আমাদের খুঁজলে পাবে সোনায় লেখা ইতিহাসে…।‘