নিজস্ব প্রতিনিধি, সুন্দরবন : দিন গুজরানের জন্য সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার মানুষদের প্রায় জঙ্গলে যেতে হয়। এতে প্রাণসংশয় থাকে কারণ জঙ্গলে নানারকম প্রাণী ছাড়াও থাকে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সুতরাং যখন তাঁরা জঙ্গলে যান তাঁরা ও তাঁদের পরিবার সংশয়ে থাকেন আদেও সুস্থ ভাবে ফিরতে পারবেন তো। এরআগে বহুবার বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে সুন্দরবন এলাকার মৎস্যজীবীদের। আবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। বৃহস্পতিবার বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর। মৃত ব্যক্তির নাম অজয় সর্দার (৫১)।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে কুলতলির কাঁটামারি গ্রাম থেকে অজয় সহ আরও তিন জন মৎস্যজীবী জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে কাঁকড়া ধরা শেষ হলে পীরখালী জঙ্গলের খাড়ি যদি থেকে নৌকা বের করার সময় নৌকার পিছনের দিকে বসেছিলেন অজয়। সেইসময় আচমকা জঙ্গলের ভিতর থেকে অজয়ের ওপর বাঘ জাঁপিয়ে পরে। অজয়ের সঙ্গী কালাচাঁদ সর্দার ও কার্তিক সর্দার দেখতে পায়। তাঁরা চিৎকার করে ওঠে। অজয়কে বাঁচানোর জন্য লাঠি নিয়ে ছুটে যায়। কোনোরকমে তাঁরা অজয়কে বাঘের মুখ থেকে রাখা করে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করলেও শেষরক্ষা আর হল না। সেখানেই মারা যায় অজয়।
অজয়ের দুই সঙ্গী শুক্রবার সকালে কাঁটামারি ঘটে মৃতদেহ নিয়ে আসেন। খবর দেওয়া হয় অজয়ের পরিবারকে। এই ঘটনা চাউর হতে গোটা গ্রামের লোক জমায়েত হয়ে যায় কাঁটামারি ঘাটে। এরপর তারাই খবর দে কুলতলী থানার পুলিশকে। খবই পেয়ে পুলিশ ওই গ্রামে এসে মৃতদেহ নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের জন্য। অজয়ের পরিবার সহ গোটা গ্রামে এখন শোকের ছায়া। অজয়ের স্ত্রী সরস্বতী সর্দার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে কাঁকড়া ধরতে নৌকা নিয়ে গিয়েছিল। যাওয়ার সময় বলেছিলো সন্তানদের নিয়ে সাবধানে থাকবে। তারপর আমি মেয়ের বাড়িতে যাই, সেখানে গিয়ে শুনি ওঁর শরীর খুব খারাপ, হাসপাতালে ভর্তি আছে। বাড়িতে ফিরে দেখলাম এই ঘটনা। সব শেষ হয়ে গেল।’