Nameless Railway Station: ১৫ বছর ধরে নামহীন রেল স্টেশন! কারণ জানলে চমকে যাবেন

অফবিট জেলা রাজ্য

নিউজ পোল ব্যুরো: পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার রায়না গ্রামে অবস্থিত একটি স্টেশন ভারতীয় রেলওয়ের (Indian Railways) মধ্যে এক অভূতপূর্ব কাহিনী তৈরি করেছে। ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও, স্টেশনটি আজও “নামহীন স্টেশন”(Nameless Railway Station) নামে পরিচিত। এটি ভারতীয় রেলওয়ের ৭১১২টি স্টেশনের মধ্যে একমাত্র স্টেশন যা কার্যকরী হলেও নামহীন রয়ে গিয়েছে(Nameless Railway Station)। এই অদ্ভুত গল্পের শিকড় লুকিয়ে আছে বর্তমান ‘রায়না’ এবং পূর্ববর্তী ‘রায়নগর’ স্টেশনের মধ্যে এখতিয়ারের বিরোধের মধ্যে।

২০০৮ সালে, ভারতীয় রেলওয়ে বাঁকুড়া-দামোদর রেলপথ (Bankura-Damodar Railway Route) থেকে নতুন ব্রডগেজ লাইন তৈরি করে রায়না গ্রামের পাশে নতুন একটি স্টেশন স্থাপন করে। এই রুটটি মাসগ্রামের কাছে হাওড়া-বর্ধমান কর্ডের (Howrah-Burdwan Cord) সাথে সংযুক্ত ছিল। তবে, পুরনো রায়নগর স্টেশনটি(Raynagar Station) নতুন স্টেশনের চেয়ে ২০০ মিটার দূরে অবস্থিত ছিল। স্টেশনটির নাম নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। রায়নগর গ্রামবাসীরা দাবি করেন যে নতুন স্টেশনটি রায়নগর নামে রাখা হোক। অন্যদিকে, রায়না গ্রামের বাসিন্দারা দাবি করেন এটি তাদের এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় স্টেশনের নাম ‘রায়না’ রাখা উচিত।

স্টেশনটির নামকরণ নিয়ে দ্বন্দ্ব গড়ায় আদালতে(Nameless Railway Station)। রায়না গ্রামবাসীরা জেলা আদালতে আবেদন করেন স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে ‘রায়না’ রাখার জন্য। আদালত বিভিন্ন কারণে তাদের আবেদন খারিজ করে দেয়। এর ফলে, স্টেশনটি আজও নামহীন রয়ে গিয়েছে। প্ল্যাটফর্মের দুই পাশে হলুদ রঙের ফাঁকা সাইনবোর্ড এই বিরোধের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। বহিরাগত যাত্রীদের জন্য স্টেশনটি চরম বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুজরাট থেকে আসা যাত্রী রবি জানান, “স্টেশনে নামার পর আমরা বুঝতেই পারছিলাম না কোথায় নামলাম। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করার পরই বুঝলাম এটি রায়না। কিন্তু স্টেশনের কোথাও নাম নেই।”(Nameless Railway Station)

স্টেশন মাস্টার নবকুমার নন্দী জানান, স্টেশনের নামকরণের প্রক্রিয়া এখনও বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, “নামকরণ নিয়ে রেলওয়ের সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। এখনও সিদ্ধান্ত ঝুলে রয়েছে।” নন্দী এবং তার ছেলে স্টেশন কমপ্লেক্সের কাছেই থাকেন। স্টেশনের টিকিট বিক্রির দায়িত্বও তাদের হাতে। বর্তমানে টিকিটে পুরনো নাম ‘রায়নগর’ উল্লেখ করা রয়েছে(Raynagar Station)। তবে, রবিবার স্টেশনে কোনও ট্রেন না থাকায় নন্দী বর্ধমান শহরে গিয়ে নতুন টিকিট সংগ্রহ করেন। বাঁকুড়া-মাসগ্রাম রুটে দিনে ছয়বার ট্রেন চলাচল করে। নতুন যাত্রীরা স্টেশনটির নাম না দেখে প্রায়শই বিভ্রান্ত হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তা নিয়েই তাদের গন্তব্য নিশ্চিত করতে হয়। এই স্টেশনটি আজও ভারতের অন্যতম অদ্ভুত রেলস্টেশন হিসেবে রয়ে গেছে। ‘নামহীন স্টেশন'(Nameless Railway Station) কেবল স্থানীয়দের দ্বন্দ্ব নয়, ভারতীয় রেলওয়ের ইতিহাসের এক চিরস্থায়ী অধ্যায় হয়ে উঠেছে।

অনেক বছর নামহীন থাকার পর অবশেষে একটি নতুন পরিচয় পেল রেলওয়ের এই স্টেশনটি। সম্প্রতি স্টেশনের নামকরণ করা হয়েছে ‘রায়নগর স্টেশন’(Raynagar Station)। এত বছর পর স্টেশনের নামকরণের ঘটনা(Nameless Railway Station) নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী এবং কৌতূহল উদ্দীপক। নামহীন থাকার ফলে এতদিন স্টেশনটিকে চিহ্নিত করা নিয়ে নানা অসুবিধা ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের অনেক সময় সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে স্টেশনটির নামহীন অবস্থার জন্য। তবে ‘রায়নগর স্টেশন’ নামকরণের মাধ্যমে সেই অনিশ্চয়তার সমাপ্তি ঘটেছে। এখন আর এই স্টেশনটিকে নামহীন(Nameless Railway station) বলে কেউ চিহ্নিত করতে পারবে না।