IND Vs PAK: পাকিস্তান ছড়িয়ে লাট করল নাকি কোহলিরা আসলেই সর্বশ্রেষ্ঠ!

ক্রিকেট ক্রীড়া

বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: ডাক্তারি শাস্ত্রে একটা কথা আছে। মানুষের মৃত্যুতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। বেঁচে থাকাটাই পরম আশ্চর্যের বিষয়। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় দুবাইয়ে ভারত পাক (IND Vs PAK) মহারণ দেখতে দেখতে বেশ টের পাওয়া যাচ্ছিল কথাটা কতখানি প্রাসঙ্গিক। দুপুরে যে উইকেটে জশপ্রীত বুমরাহ্‌বিহীন আলুনি বোলিং ইউনিটের সামনে নাস্তানাবুদ পাক ব্যাটাররা, একই উইকেট সন্ধ্যায় আফ্রিদি-রউফদের পিটিয়ে বল ছাতু করতে দেখা গেল কোহলি-গিল-আইয়ারদের।

আরও পড়ুনঃ Jasprit Bumrah: ভারত-পাক ম্যাচের জন্য মাঠে পৌঁছে গেলেন বুমরাহ্, টসে জিতে ব্যাটিং পাকিস্তানের

দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর একদিনের ক্রিকেটে শতরানে ফিরলেন বিরাট। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ক্রিকেটের ভগবানকে টপকে প্রথম ব্যাটার হিসাবে হয়েছিলেন ওডিআই ফরম্যাটে ৫০টি সেঞ্চুরির মালিক। এদিন দুবাইয়ে আরও এক কদম এগিয়ে হাঁকালেন ৫১ তম। আর দিনটাও কী বেছে নিয়েছেন! খোদ চিরশত্রুদের বিরুদ্ধে ২০১৭ ফাইনালের হিসাব সুদে আসলে মিটিয়ে দেওয়ার দিনই! তাঁর ১১১ বলে অপরাজিত ১০০ -এর সৌজন্যে ৪৫ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটের অনায়াস জয় পেয়ে গেল মেন ইন ব্লু। এদিকে বারংবার তাঁর সঙ্গে তুলনা করা হয় যাঁর, সেই বাবর আজম এদিন ভাল শুরু করেও ২৬ বলে ২৩।

তাহলে ২০১৭ ফাইনালে ১৮০ রানে হারের এক যথার্থ বদলা? কী করে বলা যায়? কোহলির সেঞ্চুরি আর শ্রেয়স আইয়ারের (৫৬) হাফ সেঞ্চুরিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে অতি সহজ জয় এলেও রবিবারের মহা দ্বৈরথ (IND Vs PAK) যে দেখিয়ে গেল দু-একটা সীমাবদ্ধতাও। যা নক আউট পর্বের আগে অধিনায়ক রোহিত এবং টিম ম্যানেজমেন্টকে চিন্তায় রাখতে বাধ্য। একটি সীমাবদ্ধতা অবশ্যই ফিল্ডিং। আগের দিন হাতে পাওয়ার রসগোল্লার মত ক্যাচ ছেড়েছিলেন অধিনায়ক স্বয়ং এবং হার্দিক পাণ্ডিয়া। এদিন পরপর দুই ওভারে মহম্মদ রিজওয়ান এবং সৌদ সাকিলকে জীবন দান করেন যথাক্রমে হর্ষিত রানা এবং কুলদীপ যাদব।

নিউজ পোল ফেসবুক পেজের লিংক: https://www.facebook.com/share/1EA79Afcw5/

যদিও দুটি ভুলের একটির জন্যও মাশুল দিতে হয়নি। ক্যাচ পড়ার পরেও রিজওয়ান-সাকিল দুজনেই পরের ওভারে ফিরে যান। যা ক্ষতি হয়েছিল তা চোখের পলকেই মেরামত করে ফেলে টিম ইন্ডিয়া (Indian Cricket Team)।‌ অবশ্য এতে অবাক হওয়ার কী আছে? চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (Champions Trophy 2025) তো আসলে ভারতের জন্য তুরন্ত ক্ষতি মেরামতেরই মঞ্চ। দ্বিতীয় সীমাবদ্ধতা বুমরাহ্‌বিহীন বোলিং ইউনিটের নেতৃত্বে মহম্মদ শামি। সেখানেও একই গল্প।

Mohammed Shami

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৫ উইকেট নেওয়া শামি এদিন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে ৮ ওভারে কোনো উইকেট না নিয়ে ৪৩ দিলেন, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হল, মাত্র ৩ ওভার করেই বেশ কিছুক্ষণের জন্য মাঠ ছাড়েন তিনি। সে সময় তাঁকে নিয়ে শঙ্কা বাড়ছিল ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। তিনি আর ফিরতে পারবেন তো? কিংবা ফিরলেও বল কীরকম করবেন? এইসব প্রশ্নেই তখন সরগরম কমেন্ট্রি বক্স। আশ্চর্যজনকভাবে এই ক্ষতিও মেরামত করে ফেলল ভারত। দুর্দান্ত বল করে পাক ব্যাটারদের হাত খুলতেই দিলেন না হর্ষিত রানা, হার্দিক পাণ্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেলরা। আর তারপর শুধুই “দ্য কুলদীপ যাদব শো”।

শুধু তো তিনজনকে পরাস্ত করা কিংবা ৯ ওভারে মাত্র ৪০ রান নয়। বাঁহাতি চায়নাম্যান বোলার যেভাবে সালমান-আফ্রিদিদের ফেরত পাঠাচ্ছিলেন, দেখে তখনই বুক কাঁপছিল পরে কী হবে সেটা ভেবে। ভারতের ভাঙাচোরা বোলিংয়ের বিরুদ্ধে যে উইকেটে খাবি খাচ্ছেন বাবর আজমরা সেই উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য প্রতিকূল মনে হওয়ায় স্বাভাবিক। সেইসঙ্গে এও মনে হওয়া স্বাভাবিক যে ভারত-পাকিস্তান (IND Vs PAK) দ্বৈরথের মত মেগা ম্যাচে এমন উইকেটে আফ্রিদি-রউফ-নাসিম সমৃদ্ধ পেস অ্যাটাকের বিরুদ্ধে রোহিতরাও ধ্বসে পড়বেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল ঠিক উল্টো ছবি। তাই দুটো বড় সীমাবদ্ধতা সত্বেও শেষ পর্যন্ত প্রশ্নটা রয়েই গেল। পাকিস্তান ছড়িয়ে লাট করল নাকি আসলে কোহলিরা সত্যিই অপ্রতিরোধ্য?