নিউজ পোল ব্যুরো: শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে, বা কখনও কখনও ব্যস্ত রাস্তাঘাটের পাশেই, কোথাও একটুকরো নিঃসঙ্গতা কিন্তু রয়েইছে কারও বাবা, কারও মায়ের মধ্যে। ছেলে-মেয়ে কেউই দেশে নেই—কেউ পাড়ি দিয়েছে বিদেশে চাকরির টানে (Work Migration), কেউ আবার বিবাহসূত্রে অন্য শহরে। বছরে একবার, বা ভাগ্য ভালো হলে দু’বার, সন্তানের মুখ দেখা যায়। বাকি সময়টায় ক্যালেন্ডার গুনতে গুনতেই কেটে যায় সময়। এই শহুরে প্রবীণদের (Urban Elderly) জীবনে প্রতিদিনের রুটিন যেন একঘেয়ে একটা যন্ত্রণা। ঠিক সময়ে ওষুধ খাওয়া, আত্মীয়দের সঙ্গে ফোনে দুটো কথা, কখনও বা জানালার পাশে বসে পুরনো সিনেমার গান শোনা—এই নিয়েই জীবন। সিনেমা দেখা, শীতের দুপুরে বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে যাওয়া, বা পুজোর বাজারে ভিড়ের মধ্যে হাঁটা—সবই আজ কেবল স্মৃতির পাতায় (Elderly Support in Kolkata)।
আরও পড়ুন:- Mothabari: মোথাবাড়ি যেতে পারবেন শুভেন্দু, শর্তসাপেক্ষে অনুমতি কলকাতা হাইকোর্টের
এই একাকিত্ব আর অসহায়তার গল্পই বদলে দিতে এগিয়ে এসেছে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (Volunteer Organizations for Elderly)। কলকাতা ও শহরতলিতে (Suburban Kolkata), একাধিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে যারা প্রবীণ নাগরিকদের পাশে দাঁড়াতে তৈরি (Elderly Support in Kolkata)। শুধু জরুরি পরিষেবাই নয়, এঁরা গল্পের সঙ্গী, চিকিৎসার সাথী, আবার পুজোর বাজারের বন্ধু পর্যন্ত। এই সংস্থাগুলোর পরিষেবা বিস্তৃত। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া, হাসপাতালে ভর্তি করানো (Medical Assistance for Seniors), কেমোথেরাপি বা ডায়ালিসিসের সময় সাহায্য করা (Cancer Care, Dialysis Support)—সবই করা হয়। পাশাপাশি, পেনশন তোলা, ব্যাঙ্ক কিংবা পোস্ট অফিসের কাজ, এমনকি ট্যাক্স জমা দেওয়া—এসবও থাকে তাঁদের পরিষেবার মধ্যে (Official Assistance for Elderly)।
বারাসতের (Barasat) এক সংস্থার আধিকারিক জানালেন, “আমাদের কাছে মেডিক্যাল ও নন-মেডিক্যাল দুই ধরনের সাপোর্টই রয়েছে। যাঁরা পরিবার থেকে দূরে একা থাকেন, তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজন মেটাতে আমরা পাশে থাকি।” এই সংস্থার সদস্য মৈত্রেয়ী দাশগুপ্ত বলেন, “ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া, ছোট ছোট গেট টুগেদার আয়োজন করা, এমনকি উইকএন্ড টুর (Weekend Tour for Seniors)—সবই আমরা করে থাকি। মূল কথা, একাকিত্ব যেন আর কাউকে গিলে না খায়।” তবে পরিষেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নয়। নির্দিষ্ট অর্থমূল্যের বিনিময়ে সদস্য হতে হয়। কিন্তু পরিষেবা নেওয়া প্রবীণরা এতে ভীষণ খুশি।
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক:- https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT
আরতি দামের কথায়, “ছেলেরা বিদেশে। এখন এই বয়সে ‘সাথে আছি’ সংস্থার উপরেই ভরসা। ওরাই আমার আপনজন।” সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সোমা মুখোপাধ্যায় এক দম্পতিও বলেন, “আমরাও এক বেসরকারি সংস্থার পরিষেবা নিই। প্রয়োজনের সময় যেমন সাহায্য চেয়েছি, ঠিক তেমনই পেয়েছি।” বিশিষ্ট ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বর্তমানে এই ধরনের পরিষেবা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমি নিজেও এমন রোগী পেয়েছি, যাঁদের চিকিৎসার দায়িত্ব এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা নিয়েছেন (Elderly Support in Kolkata)। ভিডিও কলে ছেলেমেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। এই বয়সে মানসিক সাপোর্টটাই সবচেয়ে জরুরি (Mental Health Support for Seniors)।”