নিউজ পোল ব্যুরো: রাজতন্ত্রের দাবিতে অগ্নিগর্ভ নেপাল (Nepal)। পরিস্থিতি ক্রমশই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে । গণতন্ত্র (Democracy) নয়, ফিরিয়ে আনা হোক রাজতন্ত্র (Monarchy) এটাই দাবি। আর এই দাবি নিয়েই নেপালের রাজতন্ত্রপন্থী রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি (RPP) মঙ্গলবার রাজধানী কাঠমান্ডুতে আবারও বিক্ষোভ শুরুর পরিকল্পনা করেছে। এবার তারা বালখুতে বিক্ষোভ করার কথা ঘোষণা করেছে। তাদের দাবি রাজতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং পুলিশ হেফাজতে থাকা দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তি। বিষয় যাতে হাতের বাইরে চলে না যায় সেই কারণে সতর্ক রয়েছে পুলিশও।
এই ঘটনার আগে ২৮ মার্চ কাঠমান্ডুর তিনকুন এলাকা রাজতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। নিরাপত্তা কর্মী এবং রাজতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন নেতা এবং রাজতন্ত্র সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। নেপালে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত জয়েন্ট পিপলস মুভমেন্টের সমন্বয়কারী নবরাজ সুবেদীকে গৃহবন্দী করা হয়েছে। অন্যদিকে আরপিপি নেতাদের সহ-সভাপতি রবীন্দ্র মিশ্র এবং সাধারণ সম্পাদক ধাওয়াল শমসের রানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তিনকুনে বিক্ষোভের সময় সহিংসতা উস্কে দেওয়ার জন্য সরকার এবং রাজতন্ত্র উভয় শিবিরই একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে। মঙ্গলবার আরপিপি ‘পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য ব্যবস্থা পরিবর্তন করুন’ স্লোগানে বিক্ষোভ দেখাবে বলে জানানো হয়েছে। এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেবেন দলের সভাপতি রাজেন্দ্র লিংডেন। রাজতন্ত্রপন্থী দল জয়েন্ট পিপলস মুভমেন্টও এই বিক্ষোভকে সমর্থন করবে।
আরও পড়ুনঃ Mothabari: মোথাবাড়ি যেতে পারবেন শুভেন্দু, শর্তসাপেক্ষে অনুমতি কলকাতা হাইকোর্টের
ঘটনা নিয়ে সতর্ক রয়েছে নেপাল পুলিশ। নেপাল পুলিশের মুখপাত্র দীনেশ কুমার আচার্য নেপালের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন যে আরপিপি বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ২,০০০ এরও বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। আরেকজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা আশা করি সংসদে ১৪টি আসনের দলটির এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকবে।” যদিও কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যদি কোনও বিক্ষোভকারী ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনায় যুক্ত হন তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ২৮ মার্চ রাজতন্ত্র এবং হিন্দু রাষ্ট্রের দাবিতে রীতিমত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রাজধানী কাঠমান্ডু এবং তার সংলগ্ন অঞ্চল। সরকারী ভবনে ভাঙচুরের পাশাপাশি একাধিক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা। এই সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে রবিবার সন্ধ্যায় সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানান নেপালের (Nepal) প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তার পরেই ফের এই বিক্ষোভের ডাক। প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে নেপালের (Nepal) সিংহাসনে বসেছিলেন জ্ঞানেন্দ্র। তবে ২০০৬ সালেই ক্ষমতা হারান তিনি। এরপর ২০০৮ নাগাদ ২৪০ বছরের রাজতন্ত্রকে হটিয়ে নেপালে প্রতিষ্ঠা করা হয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। এরপর ২০১৫ সালে হিন্দু রাষ্ট্রের তকমাও উঠে যায় নেপালের গা থেকে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয় দেশটিকে।
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক:- https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT