শ্যামল নন্দী, বারাসাত: সমুদ্র যেন শুধু জলরাশি নয়, হাজারো কাহিনির আখ্যান। ঠিক তেমনই দীঘার (Digha) অদূরে মীরগোদা (Mirgoda) নামের শান্ত এক গ্রামে লুকিয়ে আছে এক বিস্ময়কর পৌরাণিক ইতিহাস লঙ্কেশ্বরী দেবীর (Lankeshwari Goddess) আগমন। বিশ্বাস করা হয়, আজ থেকে প্রায় দুই সহস্রাব্দ পূর্বে, লঙ্কার রক্ষক রাবণের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে, তাঁরই আরাধ্যা দেবী লঙ্কেশ্বরী (Lankeshwari Goddess) এক নৌকায় চেপে পাড়ি দেন বঙ্গোপসাগর। পৌঁছান বাংলার মাটিতে, মীরগোদায় (Mirgoda)। সেই অলৌকিক নৌযাত্রার স্মৃতি আজও জেগে আছে মীরগোদার মন্দিরে।
আরও পড়ুন: AI Art Exhibition: তুলির বদলে প্রযুক্তি, চিত্রে ভবিষ্যতের ছোঁয়া!
মন্দিরটি যদিও বর্তমান রূপে প্রায় পাঁচশো বছরের পুরনো, ইতিহাস বলে কালাপাহাড়ের আক্রমণে প্রাচীন মন্দির ধ্বংস হয়েছিল। তবে লোককথা আর বিশ্বাস আজও টিকিয়ে রেখেছে দেবীর মহিমা। এই মন্দিরে দেবীর প্রতিমার (Lankeshwari Goddess) পাশে এক রহস্যময় (Mystery) মাঝির মূর্তিও রয়েছে। যিনি দেবীর নৌযাত্রার সঙ্গী বলে মনে করা হয়। মন্দির চত্বরে রয়েছে এক বিস্ময়কর গর্ত, যেখান থেকে এখনও শোনা যায় সমুদ্রের গর্জন, কখনও দেখা যায় জলও।
মন্দিরের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে এক বিশেষ গাছ। যার নাম কেউ জানে না। গ্রামবাসীরা একে বলেন “অজানা গাছ”। দেবীর মতোই এই গাছের পেছনেও নৈবেদ্য দেওয়া হয়। দেবীর শক্তিকে কেন্দ্র করে বহু অলৌকিক ঘটনার কথা প্রচলিত। যা স্থানীয় মানুষ ও ভক্তদের বিশ্বাসকে আরও মজবুত করেছে।
নিউজ পোল বাংলা ইউটিউব লিঙ্ক: https://youtube.com/@newspolebangla?si=mYrQvXTBQ1lG3NFT
ইতিহাসবিদদের মতে, এখানে একসময় ছোট একটি বন্দর ছিল, যার সংযোগ ছিল সিংহলের সঙ্গে। এমনকি, ইফ সিঙের মতো পর্যটকরাও এই অঞ্চল ঘুরে গিয়েছিলেন ৭ম শতাব্দীতে। কেউ কেউ মনে করেন, লঙ্কেশ্বরী আদতে বরাহ অবতারের এক রূপ।এই অলৌকিক ইতিহাস ও বিশ্বাসের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে মীরগোদার লঙ্কেশ্বরী মন্দির—যেখানে মিশে আছে পুরাণ, আস্থা আর সমুদ্রের নিরন্তর সঙ্গীত।