স্ত্রী চান না সন্তান, নিজের ভ্যাসেকটমি করলেন চিকিৎসক

আন্তর্জাতিক

নিউজ পোল ব্যুরো: তাইওয়ানের এক চিকিৎসক চেন ওয়েই নং এমন এক কাণ্ড ঘটিয়েছেন, যা শুনে রীতিমতো বিস্মিত পুরো বিশ্ব। পেশায় প্লাস্টিক সার্জন চেন, নিজের সুখী দাম্পত্য জীবন ও স্ত্রীর ইচ্ছা পূরণ করতে এমন সিদ্ধান্ত নেন, যা দুঃসাহসিক তো বটেই, নজিরবিহীনও। তিনি নিজেই নিজের ভ্যাসেকটমি করেছেন—এক অপারেশন যেখানে শুক্রনালী কেটে ফেলে দেওয়া হয়, যাতে পুরুষ আর সন্তান উৎপাদনে সক্ষম না থাকে। চেন ও তাঁর স্ত্রী তিন সন্তানের জনক-জননী। তবে তিন সন্তানের পর আর সন্তান নিতে রাজি ছিলেন না চেনের স্ত্রী। স্ত্রীর এই ইচ্ছাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চেন সিদ্ধান্ত নেন যে, পরিবারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় দায়িত্বটা তিনিই তুলে নেবেন। কিন্তু বিষয়টি আরও অবিশ্বাস্য হয়ে ওঠে যখন তিনি নিজেই নিজের অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন।

তাইপেই শহরের নিজস্ব ক্লিনিকে চেন অপারেশনটি সম্পন্ন করেন। পুরো প্রক্রিয়াটি মোট ১১টি ধাপে সম্পন্ন হয়। লোকাল অ্যানাসথেশিয়া ব্যবহার করে অস্ত্রোপচার শুরু করেন তিনি। যদিও সাধারণত এই ধরনের অপারেশন ১৫ মিনিটে শেষ হয়ে যায়, চেনের ক্ষেত্রে তা ১ ঘণ্টা সময় নেয়। কারণ নিজের শরীরের উপর নিজেই ছুরি-কাঁচি চালানো কোন সহজ কাজ নয়। তবে তিনি সফল হন, এবং এখন সুস্থ আছেন। চেনের এই সাহসিকতাকে রীতিমতো কুর্নিশ জানাচ্ছেন মানুষ। এখানেই শেষ নয়, চেন তাঁর পুরো অপারেশন প্রক্রিয়াটি ভিডিও করে ফেসবুকে আপলোড করেছেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, মানুষকে এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন করা। এখনও পর্যন্ত ভিডিওটি প্রায় ৪ লাখ মানুষ দেখে ফেলেছেন।

চেনের এই কাজ শুধু একটি অস্ত্রোপচার নয়, এটি ভালোবাসার এক নিঃশব্দ ভাষা। স্ত্রীর সুখের জন্য নিজের জীবনধারা পরিবর্তন করতে পিছপা হননি তিনি। তাঁর এই সাহসিকতা সমাজের সামনে এক শক্তিশালী বার্তা দেয়—পরিবারে শুধু নারীরাই সবসময় দায়িত্ব নেবেন কেন? পুরুষদেরও এগিয়ে আসা উচিত।চেনের গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ভালোবাসা শুধু কথা নয়, এটি কর্মের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। স্ত্রীর মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলার জন্য নিজের জীবনে এমন সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্যিই বিরল।