নিউজ পোল ব্যুরো: ভাবুন তো একদিন যদি ঘুম ভাঙ্গতেই আপনি নিজেকে দেখতেন জঙ্গলে! যদি থাকতো না পোশাক, বাড়ি এমনকি খাবার। কি করতেন তখন? নিশ্চই আদিম মানুষের মতন জীবনটা মেনে নিতে না পেরে আগেই চিৎকার করে কাদতেঁন। কিন্তু আপনি কি জানেন এমন ভাবেই পৃথিবীর কোনও কোনায় মানুষ থেকে চলেছে আজও। তবে তারাই আজ আমাদের চোখে অপরাধী। তাদের অসহায়তা এখন বদলেছে শুধুই হিংস্রতায়। তবু তাদের জন্য করা হয়না কিছুই, বরং ভয়ে সেই সমস্ত জায়গায় প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে সাধারণ মানুষের।

এমনই জায়গা রয়েছে ভারতেও, এখানে ৫০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এক দ্বীপে বসবাস করেন এখনও বেশ কিছু মানুষ এভাবেই। এখনো তারা আধুনিক সমাজ থেকে অনেক পিছিয়ে। তবে বর্তমানে আদিম মানুষের মতন জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন তাঁরা। ঠিক কতজন মানুষ এই দ্বীপে বসবাস করেন তার সঠিক তথ্য জানা না গেলেও ধারণা করা হয় সেখানে বসবাসকারীর সংখ্যা ৫০০ জনের বেশি। এই দ্বীপে নিষিদ্ধ(Forbidden Island)সাধারণ মানুষের প্রবেশ অধিকার। আর যদি ভুলেও কেউ করেন তবে মৃত্যু অনিবার্য। দ্বীপগুলোর ১০ কিলোমিটার সীমানার মধ্যে প্রবেশ করলেই তাদের হাতে প্রাণ যাবে সবারই। সাধারণ হোক কিংবা সেলিব্রেটি অপরিচিত হওয়ার কারণে তাদের দেখামাত্রই মেরে ফেলেন এই দ্বীপের মানুষ।

কৃষিকাজের জ্ঞান কিংবা আগুন জ্বালানো কোনটি তারা এখনও পর্যন্ত রপ্ত করে উঠতে পারেননি। ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার থেকে সেন্টিনেল দ্বীপের দূরত্ব প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার। এই শহরকে অত্যন্ত আধুনিক শহর হিসেবে গণ্য করেছে ভারত সরকার। অথচ এই সাগরের কাছেই থাকা আরেকটি দ্বীপের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই এই দ্বীপের বাসিন্দাদের। বরং রয়েছে তাদের প্রতি ভয়। ভারতের জনপ্রিয় এক চ্যানেল থেকে এর আগে দু একবার ত্রাণ পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সেই দ্বীপে, কিন্তু সব শেষের বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয় তাদেরকেও। এমনকি কয়েকবার প্রাণে মেরে ফেলা হয় কয়েকজন উদ্যোক্তাদের। সম্প্রতিকালেই তাই আর কেউই সাহস যোগায় না সেখানে পৌঁছানোর। মাঝেমধ্যেই খবর মেলে শুধুমাত্র দ্বীপের আশেপাশে পৌঁছে যাওয়ার কারণে খুন হতে হয় বেশ কিছু জেলেদের। অবস্থা এতটাই ভয়ংকর যে শেষমেষ তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করতে পাঠানো হেলিকপ্টারটিকেও তীর মেরে নষ্ট করে দেন তাঁরা। এই অবস্থায় আদেও কি তাদের এ যুগে আনা সম্ভব তা নিয়ে রয়েছে নানান বিতর্ক। স্বাভাবিকভাবেই তাই তাদেরকে নিয়ে ভাবা হয় না আজকাল। যুগের পর যুগ কাটলেও সুদূর প্রান্তে থাকা ওই মানুষগুলো আজও বঞ্চিত আধুনিক সবকিছুর থেকেই। আজও মানুষগুলো পড়ে থাকেন সেই আদিতেই।