Donald Trump: ট্রাম্পের শুক্ল নীতি: ‘গ্রেট আমেরিকা’ না কি আত্মঘাতী গোল?

আন্তর্জাতিক

নিউজ পাল ব্যুরো: ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) লক্ষ্য ছিল দেশের অর্থনীতিকে (Economic) চাঙ্গা করা এবং বিশাল কর্মসংস্থান (Employment) তৈরি করা। এই উদ্দেশ্যে তিনি শুল্ক নীতিতে আক্রমণাত্মক মনোভাব গ্রহণ করেছেন। তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপগুলির ফলে আমেরিকার (America) দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে এবং একে তারা ‘আত্মঘাতী গোল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

ট্রাম্পের (Donald Trump) শুল্ক নীতির (Customs policy) পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল ঘরোয়া উৎপাদন বাড়ানো, যা আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে এবং আমেরিকার (America) অর্থনীতি ‘গ্রেট’ হবে। তিনি মনে করেন, আমদানি করা পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর মাধ্যমে দেশীয় শিল্প রক্ষা হবে এবং বাণিজ্য (Trade) ঘাটতি কমানো যাবে। ট্রাম্পের (Trump) ধারণা, এমন শুল্ক আরোপ করে কিছু দেশের উপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা যাবে, যা তাদের আমেরিকা (America) থেকে পণ্য কেনার জন্য বাধ্য করবে।

তবে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন যে, এর বিপরীত ফলাফল হতে পারে। এই শুল্ক যুদ্ধের ফলে অন্যান্য দেশও আমেরিকার (America) ওপর একইভাবে শুল্ক আরোপ করতে বাধ্য হবে, যার ফলে মার্কিন বাজারে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে এবং সাধারণ মানুষের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যাবে। ২০১৮ সালের উদাহরণ দিয়ে তারা বলেন, তখন ট্রাম্প (Donald Trump) আমদানি (Import) করা ধাতুর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর ফলে মার্কিন ইস্পাত শিল্পে মাত্র কিছু হাজার চাকরি তৈরি হলেও গড়পড়তায় সাড়ে ৭৫ হাজার চাকরি চলে গিয়েছিল এবং ইস্পাতের দাম বেড়ে গিয়ে আমেরিকানদের (American)জন্য অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছিল।বর্তমানে, ট্রাম্প (Donald Trump) ফের আগ্রাসী শুল্ক নীতি গ্রহণ করেছেন, যার ফলে বিভিন্ন কোম্পানি যেমন কোকা কোলা, ফোর্ড এবং মহাকাশ সংস্থাগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গাড়ির দাম বাড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, কারণ গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাগুলি মেক্সিকো ও কানাডা থেকে কাঁচামাল আমদানি করে। এর ফলে ফোর্ডের মতো কোম্পানিগুলি কাঁচামালের মজুদ সংগ্রহ শুরু করেছে। আবার, এই শুল্ক নীতির ফলে ফোর্ড এবং জেনারেল মোটর্সের মতো গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিতে ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলি জানাচ্ছে যে, আগামী দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে মার্কিন বাজারে গাড়ির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন যে, এই শুল্ক নীতির কারণে আমেরিকায় প্রতিদিন অতিরিক্ত ১১ কোটি ডলার খরচ হবে এবং বছরে এর মোট ক্ষতি ৪ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।তবে, এই শুল্ক যুদ্ধের মাধ্যমে ট্রাম্প (Donald Trump) পারস্পরিক শুল্ক নীতি চালু করতে চাইছেন, যার ফলে অন্যান্য দেশও মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে বাধ্য হবে। ইতিমধ্যেই ট্রাম্প এই বিষয়ে কাজ শুরু করেছেন এবং বিভিন্ন দেশ শুল্ক অব্যাহতি চেয়েছে। ভারত এবং আমেরিকা আগামী পাঁচ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৫০,০০০ কোটি ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে, যা দুই দেশের জন্য লাভজনক হতে পারে, বিশেষ করে প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং বিকল্প শক্তির উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির জন্য।