এবার কড়া স্বাস্থ্যভবন নার্সিং স্টাফদের বিরুদ্ধে

অপরাধ কলকাতা জেলা রাজ্য শহর

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা:- সেবার মতো মহান পেশার সঙ্গে জড়িত তাঁরা। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধে রোগী এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত দুর্ব্যবহারের ভুরিভুরি অভিযোগ। ভাল করে কথা বলা কিংবা রোগী কিংবা পরিবারকে পথ্য নিয়ে ভাল করে বোঝানো ধাতে নেই অধিকাংশ নার্সদের। বরং অনেকেই নিজেদের কেউকেটা ভাবেন। সরকারি হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগের পাহাড় জমতেই এবার নড়েচড়ে বসল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য ভবনের তরফে নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যের নার্সিং কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, রোগী কিংবা পরিবারের সঙ্গে ভাল ব্যবহার না করলে, রোগীদের যত্নে ফাঁক থাকলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্বাস্থ্য ভবনের ওই নির্দেশিকা যে ভিমরুলের চাকে ঢিল মেরেছে তা বোঝা গিয়েছে সিপিএম, এসইউসিআই পন্থী নার্স সংগঠনের তথাকথিত নেত্রীদের কথাতেই। তাদের বক্তব্য, ‘নার্সদের জন্য এমন নির্দেশিকার প্রয়োজন ছিল না।’

রাজ্যের সরকারি হাসপাতলের চিকি‍ৎসক ও নার্সদের ব্যবহার নিয়ে সিপিএম জমানা থেকেই অভিযোগ ছিল আম আদমির। কিছু জিজ্ঞেস করতে গেলে নার্সদের দাঁতখিচুনি দেখতে হয়, কড়া ধমক খেতে হয় বলে অভিযোগ রোগী এবং তার পরিবারের সদস্যদের। অনেক ক্ষেত্রে সবক শেখাতে রোগীকে ঠিকমতো পরিচর্যা না করারও অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক মদতপুষ্ঠ হওয়ায় অভিযুক্ত নার্সদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থ নেওয়ার সাহসও দেখাতে পারেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ব্যবস্থা নেওয়া হলে কথয়-কথায় কজ বন্ধের হুমকি শুনতে হয়।

দীর্ঘদিন ধরে নার্সদের ‘দিদিগিরি’ সহ্য করার পরে অবাধ্য নার্সদের এবার পথে আনতে কড়া পদক্ষেপের পথেই হাঁটলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তারা। এদিন যে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবার অন্যতম শক্তিশালী স্তম্ভ হলেন নার্সেরা। বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গলের নামে শপথ নিয়ে নার্স হতে হয়। তাই তাঁদের চারটি বিষয় সব সময় মনে রাখা উচিত— এক, ভাল আচরণ, দুই, সহানুভূতিশীল ব্যবহার, তিন, নমনীয় কথাবার্তা, চার, রোগীর শুশ্রূষায় নিজেকে উৎসর্গ করে শৃঙ্খলারক্ষা করা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে চোখে পড়েছে রোগীদের সেবার সময় নার্সেরা ঠিক মতো আচরণ করছেন না। তাঁদের আচরণে সহানুভূতিও চোখে পড়ছে না। এখন থেকে নার্স এবং নার্সিং প্রশিক্ষকদের যত্ন নিয়ে রোগীর দেখভাল করতে হবে। রোগীদের আবেগের বিষয়টিও মানবিকতার সঙ্গে দেখতে হবে। এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে কড়া পদক্ষেপ করার পথে হাঁটা হবে।