Secondary examination:পরীক্ষার প্রস্তুতির মাঝেই চিরবিদায়!

জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, হুগলি :- কয়েকদিন পর থেকেই শুরু হতে চলেছে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Secondary examination)। পড়াশুনার চাপ, পরীক্ষা নিয়ে উত্তেজনা, আর তার মাঝেই সরস্বতী পুজোর আনন্দ – সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছিলো সৌমদীপ রাজবংশীর, কিন্তু এই আনন্দের মাঝেই ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। গত শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ির ফাঁকা ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলো দশম শ্রেণির (Secondary examination) ছাত্র সৌমদীপ। তাঁর এমন আকস্মিক মৃত্যুতে ত্রিবেণীর রেলঘাট কলোনিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

নিউজ পোল ইউটিউব লিংক:  https://youtu.be/uVvk1b9UKnk

শনিবার সকালে সৌমদীপ পাড়ার সরস্বতী পুজোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পুজোর প্যান্ডেল বাঁধা নিয়ে এক প্রতিবেশীর সঙ্গে সামান্য ঝামেলা হয়। যদিও কিছুক্ষণ পর সেই সমস্যা মিটেও যায়। তবে বিকেলে আরও একটি বিষয় নিয়ে অশান্তি হয় পরিবারের মধ্যে। সৌমদীপ সরস্বতী পুজোর জন্য নতুন পাঞ্জাবি কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। এই বিষয়টি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে মতবিরোধ হয়। এরপরেই ঘটে যায় এই দুঃখজনক ঘটনা। পরিবার সূত্রে খবর, শনিবার বিকেলে সৌমদীপ চুল কাটিয়ে এসে খাওয়া-দাওয়া করে। এরপর সে নিজের ঘরে চলে যায়। বাড়ির অন্য সদস্যরা তখন বাইরে ছিলেন। কিছুক্ষন পর যখন পরিবারের সদস্যরা ঘরে ফিরে আসে তখন তাঁরা দেখতে পান তাঁর নিথর দেহ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান তার পরিবার।

আরও পড়ুন: Sports: আলোহীন মাঠে থমকে গেল খেলা !

সৌমদীপের বাবা বিপুল রাজবংশী জানিয়েছেন, ‘সকালে পারে একটা সমস্যা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু পরে সব মিটে যায়। আমার ছেলেও স্বাভাবিক ছিল। ও মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কথা থেকে কি যে হয়ে গেল বুঝতে পারছি না।’ পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ জানানো হয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, সৌমদীপের মৃত্যুর পেছনে কেউ দায়ী নয় বলে তার পরিবার লিখিতভাবে জানিয়েছেন। তবে ঠিক কি কারণে সে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিল, তা এখনও রহস্যই থেকে যাচ্ছে।

কিশোর বয়সের আবেগ অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়। ছোটখাটো বিষয়েও তাঁরা মানসিকভাবে ভেঙে পরে। পরীক্ষার চাপ, পারিবারিক মতবিরোধ কিংবা সামাজিক সমস্যাগুলি অনেক সময় অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। তাদের সমস্যাগুলি বোঝার চিস্তা করা, তাদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করা এবং প্রয়োজন হলে পেশাদার কাউন্সেলিং করানো উচিত।

সৌমদীপের আকস্মিক মৃত্যু শুধু তার পরিবার নয়, গোটা সমাজের জন্য এক দুঃখজনক ঘটনা। কিশোরদের মানসিক চাপ ও আবেগ গত পরিবর্তনেরগুলোর দিকে আরও বেশি নজর দেওয়া দরকার। পরীক্ষার আগে এই দুর্ঘটনা আরও একবার মনে করিয়ে দিল – পড়াশুনা ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করা, পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং আবেগগত সমর্থন দেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনার পর ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সৌমদীপের বন্ধুরা, শিক্ষকরা ও প্রতিবেশীরা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে সৌমদীপ আর নেই। একটাই প্রশ্ন সবার মনে – এমনটা না হলেও পারত!