গুলেইন বারি সিনড্রোম সন্দেহে ছাত্রের মৃত্যু

জেলা রাজ্য স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসাত:- উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের প্যারীচরণ সরকার রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র গুলেইন বারি সিনড্রোম (জিবিএস) সন্দেহে মারা গিয়েছে। স্থানীয় এবং পারিবারিক সূত্রে খবর, মৃত ছাত্রটি আমডাঙার টাবাবেরিয়ে গ্রামের বাসিন্দা ছিল। গত ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে ওই ছাত্র তাঁর মাকে গলা ব্যথার কথা জানায়, কিন্তু পরিবার প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। তাঁরা ভেবেছিল, ঠান্ডা লেগেছে। তবে, রাতে তাঁর জ্বর আসে এবং সে ওষুধও খায়। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সে তাঁর হাত দুটোতে শক্তি না পেয়ে পড়ে যায়।

ছেলের এরকম অবস্থা দেখে ওই ছাত্রের পরিবারের লোকেরা তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত তাঁকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে এবং সে খেতে পারছিল না। শুক্রবার তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। শেষপর্যন্ত, সোমবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

এই ঘটনাটি আবারও গুলেইন বারি সিনড্রোম (জিবিএস) নামক বিরল স্নায়ুরোগের ভয়াবহতার কথা সামনে এনে দিয়েছে। মহারাষ্ট্রের পুণেতে সম্প্রতি এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে, যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে এবং বেশ কয়েকজনকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। এই রোগে আক্রান্তরা পক্ষাঘাত, খাওয়ার সমস্যা এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যার সম্মুখীন হন। মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে গুলেইন বারি সিনড্রোমে আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবরও এসেছে।

পার্ক সার্কাসের ‘ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে’র অধ্যক্ষ এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ জয়দেব রায় জানিয়েছেন, ‘মহারাষ্ট্রে এই রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেলেও আমাদের রাজ্যে এখনও আতঙ্কের কিছু নেই। গুলেইন বারি সিনড্রোম খুবই বিরল রোগ। তবে, আমাদের হাসপাতালে প্রতি বছরেই এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা ভর্তি হয়, এই সময়ে তার কোনো নতুনত্ব নেই।’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে, বর্তমানে তাঁদের হাসপাতালে এক শিশুকে গুলেইন বারি সিনড্রোম সন্দেহে ভর্তি করা হয়েছে, যাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হলেও অবস্থার উন্নতি ঘটছে।