রাইমা রায়, কলকাতা: কলকাতার বইমেলা মানেই নতুন বইয়ের উৎসব, নতুন লেখকদের আত্মপ্রকাশ। ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় বাংলা সিরিয়াল খ্যাত অভিনেতা সন্দীপ চক্রবর্তীর দুটি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে, যা তাঁর সাহিত্যযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। লকডাউনের সময় থেকে লেখালেখির যাত্রা শুরু করা সন্দীপ অভিনয়ের পাশাপাশি আজ সাহিত্য জগতে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন। সন্দীপ চক্রবর্তী মূলত ফিকশন লেখেন। তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয় ঘরে বাইরে পাবলিকেশন থেকে, যেখানে চারটি গল্প ছিল। এরপর একে একে তাঁর লেখা বিভিন্ন বই প্রকাশিত হয়েছে। এবারের বইমেলায় তাঁর প্রকাশিত বই দুটি হল— ‘ত্রিধারা’ (ঘরে বাইরে পাবলিকেশন) এবং ‘কেয়ারটেকারের দরজা’ (বসাক বুক স্টোর)। প্রথমটি সুধীন ও ঐন্দ্রিলা – এই দুটি কাল্পনিক চরিত্রকে ঘিরে লেখা সিরিজের অংশ, যেখানে দশটি গল্প প্রকাশিত হয়েছে। আর দ্বিতীয়টি একটি নতুন গোয়েন্দা কাহিনি। প্রকাশিত এই দুটি বই ৪০৩ নম্বর স্টলে পাওয়া যাবে এবারের বইমেলায়।

লেখালেখির প্রতি তাঁর ঝোঁক তৈরি হয় ছোটবেলা থেকেই। বাবা আর্মিতে কর্মরত থাকায় বিভিন্ন জায়গায় থেকে বড় হয়েছেন, ফলে ছোটবেলা থেকেই নানা ভাষার সাহিত্য পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। সত্যজিৎ রায় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা তাঁকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। কলেজজীবনে (রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির) সাহিত্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দীর্ঘ ২০ বছর তিনি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কপিরাইটার হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর তিনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত হন। অভিনয়ের পাশাপাশি লেখালেখিটাও তিনি ব্যাপকভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন।

অফিস ফেরত ইফা ইনস্টিটিউটে দীলিপ রায়ের কাছে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। এক বছরের প্রশিক্ষণের পর পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। এরপর রবীন দাস নামে এক পরিচালকের সঙ্গে পরিচয় হয়, যিনি তাঁকে গল্প লিখতে বলেন। সেই গল্পে অভিনয়ও করেন সন্দীপ নিজেই। এরপর বেশ কিছু টেলিফিল্মে অভিনয় করার পর জি বাংলার ‘অগ্নিপরীক্ষা’ সিরিয়ালে অভিনয়ে জগতে হাতেখড়ি হয় তাঁর।

সন্দীপ মনে করেন, বর্তমান প্রজন্ম বই পড়ার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে, যার অন্যতম কারণ সোশাল মিডিয়া। বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠায় পাঠকদের ধৈর্য কমছে, মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগও কমে যাচ্ছে। তাঁর মতে, চিন্তাশীলতা বাড়াতে বই পড়া খুব জরুরি। তিনি সবাইকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী হওয়ার বার্তা দিয়েছেন।