বিশ্ব সেরা রন্ধন প্রণালী

কলকাতা শহর সংস্কৃতি

দেবোপম সরকার, কলকাতা: ভারতের অন্যতম শীর্ষ হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট আইআইএইচএম। যারা প্রতিনিয়ত বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অতিথি আপ্যায়নের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে নিয়েছেন।সেইসব তরুণ রন্ধন শিল্পীদের জন্য এক বিশেষ সুযোগ এনে দিয়েছে আইআইএইচএম, যেখানে তাঁরা তাঁদের কনভেনশনাল রন্ধন শিল্পের দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করতে পারে।বুধবার থেকে অনুষ্ঠিত সেক্টর ফাইভে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজিত Young Chef Olympiad 2025 শুরু হয়েছে। এবছর এই অলিম্পিয়াডের ১১ তম আসর চলছে। এটি বিশ্ব সেরা রন্ধন প্রণালী। যেখানে তরুণ রন্ধন শিল্পীরা তাঁদের সৃজনশীলতা ও দক্ষতার মাধ্যমে একে অপরকে চ্যালেঞ্জ জানায়। এটি শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয় বরং তরুণ রাধুনীদের জন্য একটি সম্মানজনক প্ল্যাটফর্ম যেখানে তাঁরা নিজেদের দক্ষতা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারেন।

আইআইএইচএমের চেয়ারম্যান ড. সুবর্ণ বোস জানান, ‘আমরা ভারতের একমাত্র প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের আন্তর্জাতিক তরুণ রন্ধন শিল্পী প্রণালী আয়োজন করি। এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের শেফরা এখানে এসে তাঁদের নিজস্ব দেশীয় খাবার প্রদর্শন করার সুযোগ পান। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা বিশ্বজুড়ে নানা দেশের খাবারের স্বাদ গ্রহণের অভিজ্ঞতা দেয়, যা একমাত্র এই ইনস্টিটিউট থেকে সম্ভব। এবছর প্রতিযোগিতায় ৫০ টি দেশ অংশগ্রহণ করেছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এক আন্তরিকতার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন দেশ থেকে বিখ্যাত শেফ এবং মেন্টররা আসেন। এবছর আমরা বিশেষভাবে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির দিকে মনোযোগ রেখেছি, যা শীঘ্রই হোটেল ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হবে।’ ড. বোস আরও জানান,আগামী বছর চেষ্টা করছি সারা ভারতবর্ষের ৭৫ টি দেশকে নিয়ে এই আয়োজন করার।

এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় ফুড ব্লগার ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ী (ফুটকা)। তিনি জানান, ‘ভারতবর্ষের বিভিন্ন দেশে খাবারের স্বাদ মিলতেও প্লেনের টিকিট কিনে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করার চাইতে যদি কেউ আইআইএইচএমে এসে এই অলিম্পিয়াডে অংশ নেয়, তাহলে তাঁরা নিজেই অনেক দেশের খাবার চেখে দেখতে পারবেন। আমি নিজে বেশ কিছু দেশীয় খাবার টেস্ট করেছি এবং তা সত্যিই অসাধারণ। দিনকে দিন এই প্রতিযোগিতার উন্নতি দেখে ভালো লাগছে। আগামী দিনে আরও দেশ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে।’

অন্যদিকে, ৬ ফেব্রুয়ারি আইআইএইচএম গ্লোবাল ক্যাম্পাসে যারা প্রথম দশে স্থান করতে পারেনি তাঁদেরকে একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে। দু’টি করে দেশকে একটি টিমে ভাগ করে রান্না করতে বলা হয়। তাঁদের মধ্যে থেকে শ্রেষ্ঠ যাদের খাবার হবে তাঁদেরকে পুরস্কৃত করা হবে। প্রথম ১০ জনের তালিকায় যে ক’টি দেশ ফাইনালে উঠেছে সেগুলি হল- সৌদি আরব, ইংল্যান্ড, কেনিয়া, ফিলিপিন্স, ইরান, উগান্ডা, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, উজবেকিস্তান এবং আর্মেনিয়া

আইআইএইচএমের ডিরেক্টর সংযুক্তা বোস জানান, ‘আমরা সারাবছর ধরে এই প্রতিযোগিতার জন্য বসে থাকি। আমরা সারা বছর ধরে ছাত্র-ছাত্রীদের হোটেল ম্যানেজমেন্ট সুষ্ঠুভাবে কি করে চালাতে হয় তার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। একটা হোটেল ম্যানেজমেন্ট চালানোর জন্য অনেক কিছু জানতে হয়। আমাদের গর্ব অনুভব হয় যখন আমরা দেখি আমাদের ভারতের ছেলে বা মেয়ে আমাদের ইনস্টিটিউট থেকে পাশ করে বিদেশের মাটিতে মাথা উঁচু করে কাজ করছে তখন গর্ভে বুকটা ভরে যায়। আমরা এই কম্পিটিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাঁদের সৃষ্টি সংস্কৃতি আদব-কায়দা জানা এবং বোঝার চেষ্টা করি এবং স্টুডেন্টদেরও এতে সুবিধে হয়। তারা হাতে কলমে কাজ করে তাঁদের ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে সুবিধে হয়।’ উল্লেখ্য, এই মাসেই এই অলিম্পিয়াডের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হতে চলেছে নিকো পার্কে।