জয়তু নেতাজি, পৈতৃক ভিটেয় ১২৮ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন

জেলা রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, কোদালিয়া: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের এক অবিস্মরণীয় নাম। তাঁর জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি, কটক শহরে জন্মগ্রহণ করেন এই মহাবীর। তিনি ছিলেন বিখ্যাত আইনজীবী জানকী নাথ বসু এবং প্রভাবতী দেবীর ষষ্ঠ সন্তান। ছোটবেলা থেকেই তাঁর মধ্যে ছিল এক বিশেষ জেদ এবং সংগ্রামী মনোভাব। তাঁর জীবনধারা এবং দেশপ্রেমের অদম্য উদাহরণ আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।

https://www.facebook.com/share/v/1BkPR85wPs/

নেতাজির পৈতৃক বাড়ি কোদালিয়া, দক্ষিণ কলকাতার সোনারপুর স্টেশনের পরবর্তী স্টেশন সুভাষগ্রাম থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এক সময় এই বাড়িটি ছিল ভগ্নপ্রায়, তবে বর্তমান রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এটি নতুন করে আবার সেজে উঠেছে। কোদালিয়া পাড়ায় প্রতি বছর ২৩ জানুয়ারি, নেতাজির জন্মদিবস উপলক্ষে বিশাল আয়োজন করা হয়। এবছরও সেখানে পালিত হচ্ছে নেতাজির ১২৮ তম জন্মবার্ষিকী।

সকাল থেকেই কোদালিয়া বোস পাড়ায় উৎসবমুখর পরিবেশ। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৮ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে তাঁর পৈতৃক বাড়ি ও সংলগ্ন মাঠে। নেতাজি কৃষ্টি কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নেতাজির আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করা হয় এবং সারাদিনব্যাপী নানা সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূল মঞ্চে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য তাঁর পৈতৃক বাসভবনও খুলে দেওয়া হয়েছে। নেতাজির জন্মদিবস পালনের সূচনা হয় তাঁর মূর্তি ও বাসভবনে জাতীয় পতাকার উত্তোলনের মাধ্যমে। অনুষ্ঠান স্থল সেজে উঠেছে সাধারণ মানুষ এবং এলাকার শিশু-কিশোরদের উপস্থিতিতে। এই উপলক্ষে বারুইপুর প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছে, যা দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

এই বাড়িতে ব্রিটিশ শাসনকালীন সময় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু একাধিক গুপ্ত সমিতির সভা করেছিলেন, যাতে ইংরেজদের নজর এড়িয়ে স্বাধীনতার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায়। তাঁর বাবা জানকীনাথ বসু এই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। অতীতে বাড়িটির সংস্কারের অভাব ছিল, তবে বর্তমান রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বাড়িটি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। হেরিটেজ কমিশন ও পূর্ত দফতরের যৌথ প্রচেষ্টায় বাড়ির সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে। নেতাজির কোদালিয়ার বাড়িতে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষ এই মহান নেতার ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও আসবাবপত্র দেখতে পান। এই বিশেষ দিনে, এলাকাবাসী ও অতিথিরা নেতাজির জীবন ও কর্মের নানান দিকের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন।