নিউজ পোল স্পোর্টস ব্যুরো:- পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামহলে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ঐতিহাসিক যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন (Salt Lake Stadium) এবার আন্তর্জাতিক হকি ম্যাচ (International Hockey) আয়োজনের ছাড়পত্র পেল। এতদিন মূলত ফুটবল মাঠ হিসেবেই পরিচিত ছিল এই স্টেডিয়াম, তবে এবার হকিও জায়গা করে নিল এই বিশাল ক্রীড়ামঞ্চে। এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের ক্রীড়া পরিকাঠামোর উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। এতদিন কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গে আন্তর্জাতিক মানের হকি টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য উপযুক্ত কোনো স্টেডিয়াম ছিল না। এবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে (Salt Lake Stadium) হকি ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ মেলায় বাংলার হকিপ্রেমীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশন (FIH) এবং ভারতীয় হকি ফেডারেশন (Hockey Federation Of India) সম্প্রতি স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে হকি ম্যাচের আয়োজনের জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত নতুন অ্যাস্ট্রো টার্ফ, উন্নত আলোকব্যবস্থা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা থাকার কারণে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্রীড়া বিভাগ এবং রাজ্যের হকি সংস্থা একসঙ্গে কাজ করে এই আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। সূত্রের খবর, প্রথম আন্তর্জাতিক হকি ম্যাচের দিনক্ষণ শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে।
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন (Salt Lake Stadium) এতদিন শুধুমাত্র ফুটবলের জন্য পরিচিত ছিল। বহু ঐতিহাসিক ম্যাচের সাক্ষী এই স্টেডিয়াম এবার হকি খেলার ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্ত খুলে দিল। ভারতের অন্যতম বড়ো স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিত যুবভারতীর এই পরিবর্তন শুধু রাজ্যের নয়, দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। হকি ভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনে একসময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল, তবে সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলের জনপ্রিয়তার তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। এবার কলকাতায় আন্তর্জাতিক হকি ম্যাচ হলে রাজ্যে হকির (Hockey) প্রতি মানুষের উৎসাহ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। হকি বেঙ্গলের প্রেসিডেন্ট সুজিত বসু বলেন, ‘আমাদের দুটো অ্যাস্টোটার্ফ তৈরী হচ্ছে – একটি হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে (রাজ্য সরকারের স্টেডিয়াম), অন্যটি সল্টলেকে (হিডকোর স্টেডিয়াম)। এ বছর ম্যাচ হবে কিনা তা স্টেডিয়াম পুরোপুরি রেডি হলে বলা যাবে। তবে আমরা চেষ্টা করব বেটন কাপটা খুব ভালো করে করার জন্য। আমরা এখন একটা সার্টিফিকেট পেয়েছি। আগামী দিনে হকি নিয়ে আরও কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে।’
কি সুবিধা পাবে রাজ্য —–
১. আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্ট আয়োজন – যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন আন্তর্জাতিক হকি ম্যাচ আয়োজনের ছাড়পত্র পাওয়ায় এবার এখানে বিশ্বমানের টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে পারে।
- রাজ্যের হকি খেলোয়াড়দের সুযোগ – বাংলার উঠতি হকি খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক ম্যাচ কাছ থেকে দেখতে ও শিখতে পারবে, যা তাঁদের দক্ষতা বাড়াবে।
- ক্রীড়া পর্যটনের বিকাশ – আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলে বিদেশি খেলোয়াড়, কোচ ও দর্শকরা কলকাতায় আসবেন, যা পর্যটন শিল্পের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
- অর্থনৈতিক লাভ – হকি ম্যাচ আয়োজনের ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন এবং স্পনসরশিপ, টিকিট বিক্রি থেকে আয় হবে।
বাংলার ক্রীড়ামহল এবং সরকার যৌথভাবে পরিকল্পনা করছে, যাতে যুবভারতীতে নিয়মিত হকি (Hockey) ম্যাচ ও টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যায়। এই উদ্যোগ সফল হলে ভবিষ্যতে কলকাতাকে দেশের অন্যতম সেরা হকি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নেওয়া হবে। এত বড়ো স্বীকৃতির ফলে বাংলা আবারও প্রমাণ করল যে, শুধু ফুটবলে নয়, হকির ক্ষেত্রেও তারা আন্তর্জাতিক মানের আয়োজন করতে প্রস্তুত। এখন দেখার, কবে প্রথম আন্তর্জাতিক হকি ম্যাচ যুবভারতী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।