নিউজ পোল ব্যুরো: বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের(Netaji Indoor Stadium) বৈঠক থেকে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন । ভুয়ো ভোটার লিস্ট নিয়ে বিস্ফোরক সব মন্তব্য করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এমনকি গোটা নির্বাচন কমিশনে বিজেপির লোক রয়েছে বলেও তোপ দেগেছেন তৃণমূল নেত্রী। এমনকি বৃহস্পতিবার সদ্যনিযুক্ত দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গে মমতার মন্তব্যের বিরুদ্ধে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি লিখলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari)।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তিকে কলুষিত করার অভিযোগ এনেছেন। নির্বাচন কমিশনারকে দেওয়া চিঠিতে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আপনার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। উনি বলতে চান, সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে নাকি বিজেপি প্রভাবিত করছে। তৃণমূলের অভিযোগ, মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদে বিজেপি নিজেদের লোককে বসাচ্ছে। উনি ভাল করেই জানেন, আপনার নিয়োগ ২০২৩ সালের নতুন আইনের মাধ্যমে হয়েছে।” তিনি আরও লিখেছেন, “নতুন এই আইন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্যানেলে থাকেন। নিরপেক্ষ এই পদ্ধতিতেই আপনার নিয়োগ হয়েছে। এর আগে নিয়ম ছিল, বয়োজ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদটি পাবেন। সেই নিয়ম অনুযায়ীও এই পদ আপনারই পাওয়ার কথা ছিল। কারণ, রাজীব কুমারের পর আপনিই নির্বাচন কমিশনার হিসাবে বয়োজ্যেষ্ঠ।’’ শুভেন্দু লিখেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রকে আপনার কাজের সময়টিকে তুলে ধরেছেন মমতা। কিন্তু উনি এটা উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছেন যে, মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব যিনি পান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের সচিব পদে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক। নির্বাচন কমিশন একটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান, যা দেশের ভোটপ্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ভাবে পরিচালনা করে। ভারতের সংবিধান কমিশনকে এই অধিকার দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সেই কমিশনকে আক্রমণ করে সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছেন। এই নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলার এক্তিয়ারই ওঁর নেই।’’
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেছিলেন, ‘‘আমি নির্বাচন কমিশনকে শ্রদ্ধা করতাম। এখনও করি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনার পদে কাকে বসিয়েছে জানেন? টোটালটাই বিজেপির লোক।’’ এখানেই শেষ নয় কর্মীসভায় পাঞ্জাব-গুজরাটের লোকের নাম তালিকায় উঠছে বলেও অভিযোগ করেছেন। ভুয়ো ভোটার তালিকার বিষয়টির তালিকাও প্রকাশ্যে আনেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এমকি ‘ভূতুড়ে’ ভোটার ধরতে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য কমিটিতে থাকছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মালা রায়, দেবাংশু ভট্টাচার্য্য, জগদীশ বাসুুনিয়া, বাপি হালদার, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত শীর্ষ নেতারা। মমতা বলেন, “কোথায় কী বাধা পাচ্ছেন জানাতে হবে তৃণমূল ভবনে। ৪ জন করে বসবেন। রিপোর্ট করবেন।” ৩ দিন অন্তর রিপোর্ট দিতে হবে বলে জানিয়েছেন। তৃণমূল নেত্রীর দাবি করেছেন, “বাংলার ভোটার তালিকায় হরিয়ানার ভোটারের নাম। পাঞ্জাব, রাজস্থান, বিহারের ভোটারদের নামও তালিকায় ঢোকানো হয়েছে। মুর্শিদাবাদের ভোটারদের উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নিয়ে আসবে! মুর্শিদাবাদের নেতারা সতর্ক থাকুন।” তাঁর কথায়, “আমি যতদূর জানতে পেরেছি অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্রিলিয়ান্ট মাইন্ডস, কোম্পানি ইন্ডিয়া ৩৬০ নামে দুটি এজেন্সি আছে। তারা ডেটা অপারেটদের কাছে গিয়ে নিয়েছে। কিছু বিএলআরও-কে সাথে নিয়ে অনলাইনে কারসাজি করেছে। বাংলার লোক যাতে ভোট দিতে না পারে তাই একই এপিক কার্ডে বাইরের লোকের নাম তুলেছে।”
নিউজ পোল ফেসবুক পেজের লিংক: https://www.facebook.com/share/1EA79Afcw5/